মুক্তিযুদ্ধের পর এমন নৃশংসতা নজিরবিহীন
প্রকাশ: ২০১৭-১১-২৭ ২১:৩৬:০৪
মুক্তিযুদ্ধের পর এত বিপুলসংখ্যক নৃশংসতা নজিরবিহীন। পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মামলায় আপিল রায়ের পর্যবেক্ষণে এমনটিই বলেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে দ্বিতীয় দিনের মতো অসমাপ্ত রায় পড়া শুরু হয়। শুরুতে রায়ের পর্যবেক্ষণ দেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার। তার পড়া শেষ হলে রায়ের মূল অংশ পড়বেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন।
এর আগে রোববার বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রথম দিনের রায় পড়া হয়। এদিন পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের নৃশংস ঘটনা। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টে একটি শৃঙ্খলিত বাহিনীকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
হাইকোর্ট বলেন, বিডিআরে কোনো সেনা অফিসার থাকবে না, সব ক্ষমতা তাদের থাকবে। এটিই ছিল হত্যাকাণ্ডের মূল লক্ষ্য।
এই রায়কে পৃথিবীর ইতিহাসের বড় রায়গুলোর একটি উল্লেখ করে আদালত বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের প্রচলন নেই। মানবাধিকারের কথা বলা হয়। হত্যা একটি জঘন্য অপরাধ। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি সমাজের কাছে নজির রাখবে। অপরাধীদের অপরাধ করতে নিরুৎসাহিত করবে। এ জন্য হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রয়োজন।
এ ঘটনায় দেশের বাইরের শক্তির সম্পৃক্ততার বিষয়ে আদালত বলেন, সব সাক্ষ্যপ্রমাণ দ্বারা প্রতীয়মাণ হয় যে, এটি ভেতর ও বাইরের গভীর ষড়যন্ত্র, যা দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার প্রচেষ্টায় হয়েছিল।
আসামি সংখ্যার দিক থেকে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ওই হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত রায় দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের রায়ের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচার প্রক্রিয়ার আরেকটি বড় ধাপ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।