মিছিলে মিছিলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ

প্রকাশ: ২০১৭-১১-৩০ ১১:৪১:০২


cpbবিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম দলগুলোর ডাকা আধাবেলা হরতালে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।এছাড়া সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কর্মীরা সকাল থেকে পল্টন, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ‘গণবিরোধী সিদ্ধান্ত’ বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় এই হরতাল শুরুর পর কোথাও গোলযোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। শাহবাগ মোড় ছাড়া অন‌্যান‌্য সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, যা কার্যকর হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে।
গত ২৩ নভেম্বর বিইআরসির ওই ঘোষণার পরপরই হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বাম দলগুলো। তাদের ভাষায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ওই সিদ্ধান্ত গণবিরোধী।

বামদের এই কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি, বিকল্পধারা, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি। এছাড়া তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিও এ হরতালে সমর্থন জানিয়েছে।

সকালে হরতালের শুরুতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড় থেকে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হন। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ বাধা দিলে তা ভেঙে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন।

কিন্তু পুলিশ এ সময় সাঁজোয়া যান থেকে বিকট শব্দ সৃষ্টি করে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয়। প্রগতিশীল ছাত্র জোটের কর্মীরা তখন মিছিল নিয়ে শেরাটন মোড় ও কাঁটাবন মোড় ঘুরে আবার শাহবাগে এসে অবস্থান নেন।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিএম জিলানী শুভ ও সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নাঈমা খালেদ মনিকা ও সাধারণ সম্পাদক স্নেহার্দি চক্রবর্তী রিন্টু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ইভা মজুমদার এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ও বিভিন্ন বাম ছাত্রসংগঠনের দেড়শতাধিক নেতাকর্মীকে এই বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়।
প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল থেকে শাহবাগে আমরা অবস্থান নিয়েছি। মিছিল ও সমাবেশ করছি। কিন্তু পুলিশ এক ধরনের শব্দ তৈরি করে আমাদের বার বার সরিয়ে দিতে চাইছে।”

ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, তারা ঘুরে ঘুরে মিছিল সমাবেশ করছেন। তাদের এই হরতাল কর্মসূচি বেলা ২টা পর্যন্ত চলবে।

এ আগে হরতালের সমর্থনে মঙ্গলবার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচার মিছিল ও বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে মশাল মিছিলের কর্মসূচি পালন করে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।

কর্মসূচির আগের দিন বুধবার পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “সরকার এমন এক সময়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, যখন চাল, পিঁয়াজসহ নিত্য পণ্যের দাম নিয়ে মানুষ দিশেহারা।
“বিদ্যুতের এই দাম বৃদ্ধির কারণে শ্রমজীবী মেহনতি, স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষ এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়, দুর্দশা, দুর্গতি আরও বেড়ে যাবে।”

হরতাল ডাকার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এখনি জনগণের উপর বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অত্যাচার-আঘাত প্রতিরোধ করতে না পারলে আগামী দিনগুলোতে জনগণের উপর আরও নতুন নতুন অত্যাচার নেমে আসবে।”

সিপিবি সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম জানান, হরতাল শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।