জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোকে হুমকি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি

প্রকাশ: ২০১৭-১২-২১ ১১:৪৩:১২


al_aqsaজেরুজালেম ইসু্যতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশনের আগে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর ওপর হুমকি ও চাপ সৃষ্টির অপকেৌশল নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

জেরুজালেম ইসু্যতে প্রস্তাব পাসের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ভোটাভুটির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি সাধারণ পরিষদের বেশ কয়েকটি সদস্য দেশের কাছে ইমেইল করে সতর্ক করেছেন। হ্যালির পাঠানো সেই ইমেইল হাতে পাওয়ার দাবি করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফরেন পলিসি খবরটি জানিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে তুমুল নিন্দা ও প্রতিবাদ জারি রয়েছে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর এর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পাসের উদ্যোগ নেয় আরব দেশগুলো। জেরুজালেম প্রশ্নে যে কোনো সদ্ধিান্ত কার্যকরের আইনি বৈধতা না দিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ওই প্রস্তাব তোলা হয়।

তবে প্রস্তাবটি পাসের পক্ষে পরিষদের ১৪ সদস্যের সমর্থন থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র তাতে ভেটো দেয়। এরপর আরব দেশগুলো ও ওআইসির পক্ষ থেকে তুরস্ক ও ইয়েমেন সাধারণ অধিবেশনের শরণাপন্ন হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি পাসে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। এ ভোটাভুটিতে প্রস্তাবটি বিপুল ভোটে পাস হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তবে নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হলে তা পালন যেমন বাধ্যতামূলক, সাধারণ পরিষদে পাস হওয়া কোনো প্রস্তাবের ক্ষেত্রে তেমনটি নয়। তবে এতে জেরুজালেম ইসু্যতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান জানা যাবে।

ফরেন পলিসি জানায়, ওই বৈঠককে সামনে রেখে সাধারণ পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে সতর্ক করেছেন হ্যালি। বেশ কয়েকটি দেশের কাছে পাঠানো ইমেইলে তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা যখন ভোট দেয়ার কথা ভাবছেন, তখন আপনাদের আমি জানাতে চাই, প্রেসিডেন্ট ও যুক্তরাষ্ট্র এ ভোটকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট মনোযোগ দিয়ে এ ভোট পর্যবেক্ষণ করবেন এবং তিনি আমাকে বলেছেন, কোন কোন দেশ আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দিচ্ছে, তা যেন জানাই। এ ইস্যুতে প্রত্যেকটি ভোটকেই আমরা পর্যালোচনার আওতায় রাখব।’

হ্যালির দাবি, এর মধ্য দিয়ে অন্য দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব অনুসরণ করতে বলা হচ্ছে না কিংবা তাদের দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে না।

তবে দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়াকে যথার্থ মনে করেন তারা। এছাড়া হ্যালির চিঠির সুর তার এক টুইটার বার্তায়ও পাওয়া গেছে, যেখানে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারের ভোটাভুটিতে যারা ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ভোট দেবে, তাদের নাম টুকে রাখবে যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ব্যাপারে হুমকি দিয়ে হ্যালি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটা একটা অপমান। এ অপমান কখনও ভুলবে না যুক্তরাষ্ট্র।’

এদিকে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপে তার জেরুজালেম ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্পের ঘোষণার প্রায় দুই সপ্তাহ পর জেরুজালেম ইসু্যতে ট্রাম্পের সঙ্গে মতানৈক্য জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটেনের উগ্র ডানপন্থী সংগঠন ব্রিটেন ফার্স্টের উগ্র মুসলিমবিরোধী টুইট ট্রাম্পের রিটুইট করা নিয়ে এক বাকবিতণ্ডার পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো তাদের মধ্যে কথা হয়।

সিএনএন জানায়, ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণার পর তেরেসা ঘোষণা করেন, বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন। অবশেষে ওই ঘোষণার ১৩ দিন পর তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন।