হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কমাবে বিয়ে!
প্রকাশ: ২০১৭-১২-২৫ ২২:১৫:২০
অবিবাহিত ব্যক্তিরা বিয়ের কথা শুনলেই কেমন যেন হয়ে যান। লাজুক লাজুক চাহনিতে বুকের ভেতরটা গুবগুব করে ওঠে। এ যেন এক অজানা রোমাঞ্চকর অনুভূতি! মানুষ বিয়ে করে পস্তায়, না করেও পস্তায়। তবে করে পস্তানোই ভালো। আর হৃদ্রোগে ভুগলে তো কথাই নেই। এক্ষুনি বিয়ে করুন, মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যাবে ৫২ শতাংশ!
নতুন সমীক্ষায় জানা গেছে, হৃৎপিণ্ডের রোগে আক্রান্ত বিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে শতকরা ৫২ শতাংশ এ অবস্থার মধ্য দিয়েই জীবন অতিবাহিত করতে পারেন। মানে, এর চেয়ে খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। বিবাহিত ব্যক্তিদের জন্য আরেকটি সুখবর হলো, যেকোনো রোগে ভুগে অকালমৃত্যুর আশঙ্কাও অবিবাহিত ব্যক্তিদের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমে আসে।
ডেকান ক্রনিকল ও মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, বিয়ে হৃদ্রোগের বিপক্ষে কীভাবে কাজ করে, তা জেনে বিস্মিত হয়েছেন গবেষকেরা। তাঁদের যুক্তি, বিয়ের মাধ্যমে একজন হৃদ্রোগী সামাজিকভাবে যে সমর্থন এবং সহযোগিতা পেয়ে থাকেন, সেসব ব্যাপার আসলে তাঁর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। চিকিৎসকদের মতামত, বিয়ের পর দুটি মানুষ একে-অপরকে বেশি দিন বেঁচে থাকতে সহযোগিতা ও সমর্থন জুগিয়ে চলেন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে একে অপরকে সাহায্য করে থাকেন। ঠিক এ কারণেই বিয়ের পর যেকোনো রোগে অকালমৃত্যুর হার কমে যায়।
গবেষকেরা মোট ৬ হাজার ৫১ জন হৃদ্রোগীর ওপর এ নিয়ে সমীক্ষা চালান। এঁদের মধ্যে বিচ্ছেদ, বিধবা কিংবা কখনো বিয়ে না করা ব্যক্তিকে অবিবাহিতদের কাতারে ফেলা হয়। বাকি অংশ বিবাহিত এবং দুই অংশকেই তাঁদের জীবন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে চার বছর পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা গেছে, বিবাহিত ব্যক্তিরা হৃদ্রোগ নিয়েই বহাল তবিয়তে বেঁচেবর্তে আছেন এবং তাঁদের মধ্যে ৫২ শতাংশের নতুন করে আর কোনো হার্ট অ্যাটাক হয়নি। তবে স্বামী কিংবা স্ত্রী হারানো ব্যক্তিদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাকিদের তুলনায় ৭১ শতাংশ বেশি।
এমোরয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং লেখক আরশাদ কাইয়ুমি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হৃদ্রোগীদের ওপর বিয়ের ইতিবাচক প্রভাব দেখে আমি যারপরনাই বিস্মিত হয়েছি। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সামাজিক সমর্থন এবং আশার দরকার হয়, যা বিয়ের মাধ্যমে ঘটে থাকে।’ যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। সেখানে প্রতি চারজনে একজন হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে থাকেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ১৭ ভাগই হৃদ্রোগের কারণে।