খালেদা জিয়ার রায় ঘিরে লাঠি নিয়ে রাস্তায় থাকবে শ্রমিকরা

প্রকাশ: ২০১৮-০২-০৬ ২৩:১১:৫৯


khখালেদা জিয়ার মামলার রায় উপলক্ষে নাশকতা ঠেকাতে বুধবার থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গজারি লাঠি হাতে রাস্তায় থাকবেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। যততত্র নয়, রাজধানীর নির্দিষ্ট স্থানে গাড়ি পার্কিং করা হবে। বুধবার রাত থেকে পুলিশের পাশাপাশি মালিক ও শ্রমিকেরা ওই সব গাড়ি পাহারা দেবেন। বাসে যাত্রী তোলার আগে তল্লাশি করা হবে। কেউ গাড়িতে আগুন দিতে চেষ্টা করলে তাকে পিটিয়ে পুলিশের কাছে তুলে দেয়া হবে।

বুধবার মতিঝিলে সড়ক ভবনে মালিক ও শ্রমিক নেতাদের যৌথসভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ওই সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি খালেদা জিয়ার সাজা হলে আবারও পরিবহন খাত আক্রান্ত হতে পারে। তাই ১৫ থেকে ২০ হাজার পরিবহন মালিক ও শ্রমিক আত্মরক্ষার্থে ৭ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত রাজধানীর টার্মিনাল ও সড়কে লাঠি হাতে অবস্থান নেবেন। তিনি বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপির হরতাল অবরোধের প্রধান শিকার ছিল পরিবহন খাত। ২০১৫ সালে ৯২ পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু হয়, গাড়িতে পেট্রলবোমার আক্রমণ হয়। তাই এবার গাড়িতে আগুন ঠেকাতে বুধবারের মধ্যে সব বাসে অগ্নিনির্বাপক লাগানো হবে। থাকবে বালির বালতি। যাত্রীদের তল্লাশি করে বাসে তোলা হবে, যাতে কোনো নাশকতাকারী যাত্রীবেশে পেট্রল কিংবা বোমা নিয়ে বাসে উঠতে না পারে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকার পরও, মালিক-শ্রমিকরা কেনো দুষ্কৃতকারীদের দমনের নামে আইন হাতে নেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার এনায়েত বলেন, বাস হচ্ছে মালিকের সম্পদ ও শ্রমিকের জীবিকা অর্জনের উপকরণ। রুটি-রুজি রক্ষায় মালিক-শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে লাঠি হাতে নামবে। তিনি জানান, খালেদা জিয়ার রায়ের পর যদি বিএনপি হরতাল ডাকে তাহলে তা প্রত্যাখানের আগাম সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপি হরতাল ডাকালেও যেকোনো মূল্যে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে।

বিরোধী দলের কর্মসূচিতে জনসমাগম ঠেকাতে অতীতে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ার নজির রয়েছে। এবারও তেমন কিছুর শঙ্কা রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সমিতির সভাপতি আবদুল কালাম বলেন, মালিক-শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য কখনও কখনও বাস বন্ধ করা হয়।

এর আগে সভায় সায়দাবাদ, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া ও মহাখালী এলাকার শ্রমিক ও মালিক নেতারা বক্তৃতা করেন। ওই সভায় যততত্র গাড়ি পার্কিং না করে নির্দিষ্ট স্থানে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মিরপুরে হারুন মোল­া মাঠ, মতিঝিলের নটর ডেম কলেজের সামনের রাস্তাসহ কয়েকটি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়।

সভায় সায়েদাবাদ মালিক সমিতির সভাপতি মো. আলী সোবা বলেন, বিএনপির কেউ রাস্তায় নামলে পিঁপড়ার মতো পিষে মারব। লাঠি অন্য কোথাও পড়বে না, নাশকতাকারীদের পিঠে পড়বে। তার বক্তব্যকে সমর্থন করে করতালি দেন অন্য নেতারা। এ ছাড়া সভায় বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু, গুলিস্তান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক করম আলী প্রমুখ।