রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ‘দ্রুত করার পক্ষে’ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশ: ২০১৮-০২-০৯ ২৩:১২:৪৫
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা উদ্বেগ জানালেও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ‘দ্রুত করার পক্ষে’ মত জানিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
“ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেরি হলে এই ইস্যু হয়ত জটিল হবে,” বলেন তিনি।
বরিস জনসনের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সুচির রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এছাড়া মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর সহিংসতার মুখে গত ২৫ অগাস্ট থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে গত মাসে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করে সরকার। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের এখনই সেখানে ফেরত পাঠানো সময়োচিত সিদ্ধান্ত হবে না বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য ‘বোঝা’। মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তাদের দ্রুত স্বদেশে ফিরে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোয় এবং তাদের ‘সম্মানজনক’ প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়ায় শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন বরিস জনসন।
প্রথমবারের মতো শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ সফরে আসা বরিস জনসন শনিবার রাতে মিয়ানমারে যাবেন। তার আগে রোহিঙ্গাদের দুর্দশার কথা শুনতে এবং তাদের অবস্থা দেখতে কক্সবাজারে আশ্রয় শিবিরে যাবেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে প্রেস সচিব জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় সামনে রেখে বুধবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলার বিষয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে’ বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানান বরিস জনসন।
শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এবং ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক উপস্থিত ছিলেন।