রেকর্ড গড়েও টাইগারদের পরাজয়
প্রকাশ: ২০১৮-০২-১৫ ২৩:৫৪:৩৭
মুশফিক-সৌম্যর ফিফটি এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৯৩/৫ রানের রেকর্ড স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসসেরা ইনিংস গড়েও পরাজয় এড়াতে পারেনি। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সহজেই ছাড়িয়ে গেছে শ্রীলংকা। ৬ উইকটে জয় তুলে নিয়েছে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
আগে ব্যাট করে মুশফিকুর রহিম এবং সৌম্য সরকারের জোড়া ফিফটি ভর করে ১৯৩ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় শ্রীলংকা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল অতিথিরা।
এত দিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশর দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৯০/৫ রান। যেটা ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে করে টাইগাররা। বৃহস্পতিবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছেন মুশফিক-সৌম্য-মাহমুদউল্লাহরা।
শুধু রানের দিক থেকেই নয়! ভেন্যুর দিক থেকেও বৃহস্পতিবার মিরপুরে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়েন মাহমুদউল্লাহরা।
এদিনের আগে টি-টোয়েন্টিতে শেরেবাংলায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের স্কোর ছিল ১৮৯/৯। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৩ সালে এই স্কোর গড়ে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জাকির হাসানকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সৌম্য সরকার। হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পর জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে যান সৌম্য। ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং টেস্ট সিরিজে দলে জায়গা না পাওয়া এ ওপেনার টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফিরেই ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলেন। তার কল্যাণে উদ্বোধনীতে ২৪ বলে ৪৯ রান সংগ্রহ বাংলাদেশের।
তবে তামিম ইকবালের কাঁধের ইনজুরির কারণে ভাগ্য খুলে যাওয়া জাকির হোসেন নিজের অভিষেক ম্যাচকে ঝলমলে করে রাখতে পারেননি। দানুস্কা গুনতিলকার শিকারে ধরা পরার আগে ৯ বলে ১০ রান করতে পেরেছেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
জাকির হাসান ফিরে গেলেও উইকেটে তাণ্ডব চালিয়ে যান সৌম্য। দ্বিতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়তেই বিপদে পড়ে যান বাঁহাতি এই ওপেনার। জীবন মেন্ডিসের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৩২ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রান করেন সৌম্য। তার বিদায়ের পর অভিষেক হওয়া আফিফ হোসেন উইকেটে নামতে না নামতেই মেন্ডিসের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া বাংলাদেশ দলকে পথ দেখান মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে ৪৭ বলে ৭৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান তারা। ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নেয়ার পথে থাকা রিয়াদ থেমে যান ৪৩ রানে। তার ইনিংসটি ৩১ বলে ২ চার ও সমান ছক্কায় সাজানো।
রিয়াদের বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধে করতে পারেননি সাব্বির রহমান রুম্মন।বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হওয়ার তিন বল আগে থিসেরা পেরেরার বলে সুইফ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হন রুম্মন (১)। তবে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত খেলে যাওয়া মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪৪ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ রান করে।
জবাবে ব্যাটিং নেমে উদ্বোধনীতে ২৯ বলে ৫৩ রান সংগ্রহ করে শ্রীলংকা। গুনাথিলাকা এবং মেন্ডিসের এই জুটির বিচ্ছেদ ঘটান অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপু। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে উপল থারাঙ্গাকে সঙ্গে নিয়ে ফের ৩৭ রানের জুটি গড়েন ওপেনার কুশল মেন্ডিস।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেয়া মেন্ডিসকে ফেরান অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন। এরপর দুই রানের ব্যবধানে লংকান অধিনায়কে সাজঘরে পাঠান নাজমুল ইসলাম। শুরু থেকে একের পর বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যাওয়া শ্রীলংকান শিবিরে চতুর্থ আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। উইকেটে তুলে নেয়ার এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে না পারায় ভালো ব্যাটিং করেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ রান (মুশফিক ৬৬*, সৌম্য ৫১, মাহমুদউল্লাহ ৪৩)।
শ্রীলংকা: ১৬.৪ ওভারে ১৯৪/৪ রান (মেন্ডিস ৫৩, দাসুন শানাকা ৪২*, পেরেরা ৩৯*; নাজমুল ২/২৫)।
ফল: শ্রীলংকা ৬ উইকেটে জয়ী।