খালিশপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে এইচএসসির কেন্দ্র না করার দাবি
প্রকাশ: ২০১৮-০২-২০ ০০:০২:৫০
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :
২০১৮ সালে খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (মহেশপুর) এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষার ভেন্যু হিসাবে ব্যবহার না করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন পাঠিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাদের দাবি বিকল্প ব্যবস্থা থাকা সত্তে¡ও এ বিদ্যালয়টিকেই উদ্যোশ্যপ্রণোদিতভাবে কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। এতে দীর্ঘ ছুটির কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা চরমভাবে বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আবেদন সূত্রে জানা গেছে, খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র আছে। এসব পরীক্ষার কেন্দ্র এ প্রতিষ্ঠানে থাকার কারণে ২ মাসের অধিক শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকে । তাছাড়া অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় যেমন অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক, অস্টম শ্রেণীর নির্বাচনী ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনীর পরীক্ষার জন্য ২ মাস ক্লাস বন্ধ থাকে। এ ছাড়া শিক্ষাবর্ষে সাপ্তাহিক ছুটি ৫২ দিন, সরকার নির্ধারিত ছুটি ৮৫ দিন। সব মিলিয়ে শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৯ মাস বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। আবার এ বছর যদি এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হয় তাহলে সূচী অনুযায়ী আরো দেড় মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সেক্ষেত্রে বছরে শ্রেণী কক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীরা মাত্র দেড় মাস সময় পাবে। এক্ষেত্রে লেখাপড়ার দারুনভাবে বিঘœ ঘটবে এবং প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুন্ন হবে।
এদিকে একই দূরত্বে পাশে একটি কলেজ থাকলেও ভেন্যু হিসাবে প্রস্তাব না করে খালিশপুর মাধ্যামিক বিদ্যালয়কে ভেন্যু হিসাবে ব্যবহার করার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষার সময় কলেজ বন্ধ থাকে। কলেজকে ভেন্যু হিসাবে ব্যবহারের প্রস্তাব না করায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা মনে করছে কোন অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য অথবা বিদ্যালয়টি শিক্ষার সুনাম ধ্বংস করার জন্য পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আবেদনকারী অভিভাবকরা বলেন, এ বিদ্যালয় ছাড়াও একই দূরত্বে রয়েছে ‘শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ’। কলেজের পরীক্ষা কলেজেই হওয়া উচিত। তারা প্রশ্ন তুলে বলেন, কেন সকল সুযোগ থাকা সত্তে¡ও কলেজকে ভেন্যু হিসাবে ব্যবহার করা হবে না।
এ বিষয়ে খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, স্কুলে পিএসসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ভেন্যু থাকায় ২ মাসের অধিক সময় ক্লাস হয় না। আবার এইচএসসি বোর্ড পরীক্ষার ভেন্যু হলে আরো দেড় মাস ক্লাস বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া দারুনভাবে বিঘ্নিত হবে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাইলে আমাদের কিছুই করার নেই। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ সঠিক সিন্ধান্ত দিবেন বলে মনে করি।
এ বিষয়ে সরকারি বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমিনুল হক বলেন, খালিশপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের আপত্তি নেই মর্মে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন। অধ্যক্ষকে কলেজ বাদ রেখে মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ভেন্যু হিসাবে ব্যবহারের যৌক্তিকতা কি প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ঐ বিদ্যালয় আমাদের কলেজে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ভেন্যু হিসাবে ব্যবহার করায় আমরাও তাদের বিদ্যালয়কে পছন্দ করেছি।
এ ব্যাপারে যশোর বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র করার বিষয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে কলেজের কেন্দ্র দেবার প্রশ্নই ওঠে না।
অভিভাবকদের দাবি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।