বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশে খাদ্য ঘাটতি হয় : প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: ২০১৮-০৩-০১ ১৮:৫৩:৫১
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সার চাওয়ায় ১৮ কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল বিএনপি সরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কৃষকের ঘরে ঘরে সার পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে ৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। পরে আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিল। আবার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ৩০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি পেয়েছি। এতে স্পষ্ট বোঝা যায় বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে কৃষিখাত পিছিয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ পদক পরিয়ে দেন। পদক প্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচটি স্বর্ণ, ৯টি রৌপ্য এবং ১৮টি ব্রঞ্চ রয়েছে।
সরকারের নানা ভর্তুকি ও প্রোণোদনার ফলে কৃষিখাতে দিনে দিনে অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার ও গবেষণার ওপর বেশি জোর দিয়েছে সরকার। প্রযুক্তির কল্যাণে কৃষকরা ধান উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছেন। সেজন্য ধান উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় গেছে দেশকে খাদ্য ঘাটতি থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে রূপান্তর করেছে। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ‘কৃষি বাতায়ন’ ও ‘কৃষক বন্ধু ফোন সেবা’ চালু করা হয়েছে। এখন কোনো কৃষক চাইলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে কৃষিকাজ করতে পারবেন। এছাড়া ফসলের কোনো সমস্যা হলে কি করতে হবে টেলিফোন করে কৃষক তা জানতে পারেন।
কৃষি পদক বন্ধ করার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে এ পদক বন্ধ করেছিল। এ পদক প্রদান যাতে বন্ধ করতে না পারে সেজন্য এবার আইন করা হয়েছে। কারণ দেশের কৃষকদের উৎপাদন ও কৃষি গবেষণায় যাতে মানুষ অনুপ্রাণিত হয় সে কারণেই এ পদক প্রদান করা হয়। যারা পদক পান তারা আরও উৎসাহিত হন। অন্যরাও পদক পেতে প্রতিযোগিতা করেন। ফলে দেশে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পড়াশোনা শিখে অনেকেই কৃষি কাজ করতে সংকোচ বোধ করেন। এটা করলে চলবে না, কারণ কৃষিই আমাদের জীবন। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার্থীদেরকে এ বিষয়ে উৎসাহ দিতে হবে। শিক্ষিতরাও ফসল ফলাবে। আর এ পরিবেশ করে দিতে সরকার কৃষিতে আধুনিক চাষ পদ্ধতি প্রয়োগে উৎসাহ দিচ্ছে। এখন আর হাত দিয়ে চারা লাগাতে হবে না। এ জন্য মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি থেকে ধীরে ধীরে আমরা শিল্পে উন্নীত হবো, কিন্তু কৃষি বাদ দিয়ে নয়। কারণ, কৃষিই তো কাঁচামালের যোগান দেবে। আমাদের শিক্ষার্থীদেরকেও এ যোগানটা দিতে হবে। মাটিতে চারা রোপণ করলে বা কাজ করলে লজ্জার কিছু নেই বরং নিজের হাতে বাগান করলে সেই বাগানে যখন একটা ফল হয়, তখন সেটা ছিঁড়ে খেতে গর্ববোধ হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে উৎসাহিত করা উচিত, সবাই যদি নিজের বাড়িতে বাগান করে। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে। অনেকে গ্রামে থাকেন না, কিন্তু বহু জমি পড়ে আছে। কো-অপারেটিভের মাধ্যমে এগুলো চাষ করা যায়, তাহলে আমাদের খাদ্যের কোনো অভাব তো হবেই না বরং রফতানি করে বিশ্বের অনেক মানুষকে খাদ্য সাহায্য দিতে পারব।