যেভাবে উদ্ধার করা হলো গুহায় আটকে পড়াদের
প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১১ ১০:১৩:২৩
চরম ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান চালিয়ে থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া সবাইকে বাইরে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন ডুবুরিরা। খবর বিবিসির
মঙ্গলবার কোচসহ ৫ জনকে বের করে আনা হয়। এর আগে গত দুই দিন ধরে অভিযান চালিয়ে আটজনকে গুহা থেকে বের করে আনা হয়েছিল।
থাম লুয়াং গুহা ভিতরের এই অভিযান বিশ্বব্যাপী সবার মনোযোগ কেড়েছে। ৯০ জন দক্ষ ডুবুরির একটি দল, যাদের ৪০জন থাইল্যান্ডের এবং বাকিরা বিভিন্ন দেশের- তারা ওই গুহায় উদ্ধার অভিযান চালিয়েছেন।
তারা থাম লুয়াং গুহার ডুবে যাওয়া অন্ধকার সংকীর্ণ পথ দিয়ে কিশোরদের দিক নির্দেশনা দিয়ে প্রবেশমুখে নিয়ে নিয়ে এসেছেন।
অভিযানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই কিশোরদের একটি ক্লান্তিকর যাত্রাপথ পাড়ি দিতে হয়। যেটা কিনা অভিজ্ঞ ডুবুরিদের জন্যও ভীষণ ক্লান্তিকর ছিল।
এই অভিযান প্রক্রিয়া জুড়ে ছিল হাঁটা, পানির ওপর দিয়ে চলা, বেয়ে ওঠা, এবং পানিতে ডুব দিয়ে দড়ি ধরে এগিয়ে যাওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ।
সব ডুবুরি বাড়তি সতর্কতার জন্য মুখ জুড়ে মাস্ক ব্যবহার করেন। প্রতিটি কিশোরকে দুইজন করে ডুবুরি সাহায্য করেছে। তারা ওই কিশোরের অক্সিজেন সরবরাহের ট্যাঙ্কও বহন করে।
তবে গুহার সবচেয়ে জটিল অংশটি হল অর্ধেক পথের “টি-জংশন”। যেটা এতোটাই সংকীর্ণ যে তার ভেতর দিয়ে যাওয়ার জন্য ডুবুরিদের অক্সিজেন ট্যাঙ্কটি খুলে ফেলতে হয়েছে। সেখানে কিশোররা বাকি পথ পাড়ির দেয়ার আগে কিছু সময় জিরিয়ে নিতে পারে। পরে তারা পায়ে হেটে সহজেই প্রবেশমুখে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে তাদের চিয়াং রায়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
উদ্ধার অভিযানে অংশ দেওয়া দলের প্রধান বলেন, অভিযানের দ্বিতীয় দিনটি প্রথম দিনের তুলনায় আরো মসৃণভাবে পরিচালিত হয়েছে। প্রতিবার ডুবুরিদের দুঘণ্টারও কম সময় লেগেছে।
একটি বিশাল পাম্পিং মেশিন দিয়ে গুহার ভেতরের পানির স্তর নীচে নামিয়ে আনা হয়। যা পুরো যাত্রাকে আরও সহজ করে তোলে।
উদ্ধারের পর ওই কিশোরদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে থাই পুলিশ -সিএনএন
এর আগে গত ২৩ জুন ১২ সদস্যের একটি কিশোর ফুটবল দল এবং তাদের ২৫ বছর বয়সী কোচ উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ চিয়াং রাইয়ের ‘থাম লুয়াং’ গুহায় প্রবেশ করে। প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে গুহার ভেতর পানি ঢুকে পড়লে দলটি আটকা পড়ে যায়। নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর ডুবুরিরা দলটির সন্ধান পায়। ওই কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে।
উদ্ধার করা কিশোরদের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করছে না থাই কর্তৃপক্ষ। যাদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের বাবা-মাকেও হাসপাতালে ডাকা হচ্ছে না। এসব অভিযোগের জবাবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, সংক্রমণের ভয়ে তাদের কাছে বাবা-মা বা আত্মীয় স্বজনকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। নাম-পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে উদ্ধার অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক নারোংসাক ওসাটানাকর্ন বলেন, সবাইকে উদ্ধার করার আগে নাম-পরিচয় বলা যথার্থ হবে না। এতে যারা এখনও বেরিয়ে আসেনি, তাদের অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যেতে পারে।