তালিকাচ্যুত করলো দুই কোম্পানি

আপডেট: ২০১৮-০৭-১৮ ২১:৪৯:৫৯


দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা রহিমা ফুড ও মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ক্রিন প্রিন্টিংকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। নিকট ভবিষ্যতে কোম্পানি দুটির উৎপাদন শুরু করার কোনো সম্ভাবনা না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান। তিনি বলেন, মডার্ন ডাইং ও রহিমা ফুডের উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এছাড়া উৎপাদন শুরু করার কোনো সম্ভাবনা নেই। তারপরও এই দুই কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে বাড়ে, যা পুঁজিবাজারের জন্য ক্ষতিকর। মূলত এই কারণে কোম্পানি দুটিকে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারবিষয়ক আইনকানুন পরিপালন করাও তালিকাচ্যুতির কারণ। আজ থেকে দুটির তালিকাচ্যুতি কার্যকর হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামীর পুঁজিবাজার হবে মৌলভিত্তি সম্পূর্ণ কোম্পানির জন্য। কোনো জাঙ্ক শেয়ারের জায়গা ডিএসইতে হবে না। এই জাতীয় কোম্পানির কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা দুর্বল কোম্পানির শেয়ার নিয়ে খেলাধুলা করে বাজারের পরিস্থিতি ঘোলাটে করছে। এতে করে ভালো বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসে যাচ্ছে। এ জায়গা থেকে বাজারকে ফিরিয়ে আনার জন্য ডিএসইর সার্ভিলেন্স বিভাগ দুর্বল কোম্পানিকে মনিটরিং করছে। তাদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ডিএসই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে করি এর ফলে বাজারে একটি সুস্থ ধারা ও ভালো বিনিয়োকারীরা ফিরে আসবে।

একই বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, আইনকানুন মেনেই ডিএসইর পর্ষদ কোম্পানি দুটিকে তালিকাচ্যুত করার উদ্যোগ নিয়েছে।

রহিমা ফুড : ১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জুন থেকে। এছাড়া ২০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির নিকট ভবিষ্যতে উৎপাদন শুরু হওয়ার মতো কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কোম্পানিটির শেয়ার দর রয়েছে আকাশচুম্বি অবস্থায়। গতকাল বুধবার লেনদেনে শেষে শেয়ারটি ১৭৪.৭০ টাকায় অবস্থান করছে।

মডার্ন ডাইং অ্যান্ড স্ত্রিন প্রিন্টিং : কোম্পানিটির ২০১০ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। প্লান্ট, শ্রমিক ও গ্যাসের সমস্যা এবং মেশিনের কার্যকারিতা অনেক কম হওয়ার কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ওই বছরের ৩ আগস্ট বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে ফ্যাক্টরির জায়গা দীর্ঘমেয়াদে গোডাউনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তারপরও শেয়ারটির দর অবস্থান করছে ৩২৬.৩০ টাকায়।
১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মডার্ন ডাইংয়ের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ মাত্র ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর এই স্বল্প মূলধনের কারণে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি সহজ হয়েছে। তবে সেই দর বৃদ্ধিতে কোম্পানিটির শেয়ার এখন মাত্রাতিরিক্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। কারখানায় নিজস্ব উৎপাদন কার্যক্রম চালু না থাকায় সেটেলমেন্ট অব স্টক এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন রেগুলেশন্স, ১৯৯৮ অনুসারে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতেই থাকতে হচ্ছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিটিকে।