‘প্রবৃদ্ধি বাড়ছে কিন্তু বৈষম্য কমছে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২৫ ২১:২৫:৫৯


প্রবৃদ্ধি বাড়ছে কিন্তু বৈষম্যও বাড়ছে। প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বৈষম্য বাড়লে শক্তিশালী অর্থনীতির ভীত রচিত হবে না। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এবং প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতির প্রয়োজন। যেখানে দেশের সকল পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, বেসরকারি বিনিয়োগের পরিবেশ, সম্পদের সুষম বণ্টন ও স্বচ্ছতা থাকবে।

বুধবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘মিডিয়া ডায়ালগ: ইকনোমিক ডায়ালগ ইন ইনক্লুসিভ গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি প্রধান অতিথি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান ও ড. কাজি মারুফুল ইসলাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘অর্থনীতিতে গত ৩ বছরের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক। প্রতি বছরই প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। কিন্তু বৈষম্য করছে না। সারাদেশের প্রেক্ষাপটে কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চল এখনো দারিদ্রসীমার নীচে বাস করছে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সারাদেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রয়োজন। আঞ্চলিক পার্থক্যও দূর করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ন্যায় বিচার, দুর্নীতি এবং স্বচ্ছতা এই ৩ খাতের উন্নতি করতে হবে। এই খাতগুলোতে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। পাশাপাশি অর্ন্তভুক্তিমূলক সরকারও প্রয়োজন। রাষ্ট্রের অর্ন্তভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সরকারি খাতগুলোর দক্ষতা বাড়াতে হবে। তা না হলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে উন্নিত করা সম্ভব নয়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রবৃদ্ধি বাড়ছে কিন্তু তার সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ছে না। আবার বিনিয়োগ বাড়ার জন্য সরকারকে এই খাতের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সরকারকে মার্কেট আউটকাম বের করে নিয়ে আসতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রেখে সরকারকে ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করতে হবে।’

সরকারকে জিটুপি (সামাজিক বেষ্টনির মাধ্যমে ব্যক্তি পর্যায়ে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া) প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কেন না টেকসই উন্নয়নের মূল শর্ত হচ্ছে মান নিশ্চিত করা। এ জন্য কার্যকর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে। যে যেখাসে আছেন সেখানেই যেন কাজ করার সুযোগ পান এই পরিবেশ গড়তে হবে। যাতে গ্রামের মানুষ শহরমুখী না হয়। নারীর ক্ষমতায়নকে প্রকৃত অর্থেই কার্যকর করতে হবে।’

অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, ‘অর্থনীতিতে কিছুটা উন্নতি ঘটছে। গ্রামে বিদ্যুৎ গিয়েছে, সড়ক হয়েছে। তবে অর্ন্তভুক্তিমূলক অর্থনীতির কতোটা উন্নয়ন হয়েছে তাতে সন্দেহ থাকলেও আশা রয়েছে। আমাদের আরও কাজ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনশক্তি হচ্ছে এই দেশের গ্রিন হিউম্যান রিসোর্স। এই হিউম্যান রিসোর্স হচ্ছে আমাদের অর্থনীতিতে জবলেস গ্রোথ। যা আমাদের অর্থনীতির মূলশক্তি। এই শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলেই উন্নয়ন ঘটবে।’