মা জিজ্ঞেস করছিল আমার জন্য কী রান্না করবে: জয়
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২৭ ১২:০৪:০৩
জন্মদিনে কি রান্না করব, ছেলের কাছে জানতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৭ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক স্টাটাসে এতথ্য জানিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে জয় লেখেন, ‘এখন আমার পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছি। মা জিজ্ঞেস করছিল আমার জন্য কী রান্না করবে। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে আমি খুঁতখুঁতে না, মায়ের হাতের সব রান্নাই আমার পছন্দ।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। বিজয়ের পর তার নানা শেখ মুজিবুর রহমান তার নাম রাখেন।
১৯৭৫ সালে জয় মায়ের সঙ্গে বাবার কর্মস্থল জার্মানি হয়ে ভারতে যান। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে ভারতে। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক পাস করেন জয়। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন তিনি। ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন জয়।
২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জয় রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন। গত সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন ও দেশের বিভিন্ন এলাকা সফরের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝেও বেশ ভালো প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন। যদি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে দায়িত্বশীল পদপ্রাপ্তি নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। কিন্তু কোনো দলের গুরুত্বপূর্ণ পদেই আসীন হতে অনীহা প্রকাশ করেন তিনি।
২০০৭ সালে জয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি নিয়ে আসেন। পর্দার অন্তরালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে গোটা দেশে তথ্য-প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটান এই তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। ২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর সজীব ওয়াজেদ জয়কে অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বর্তমানে দলীয় ঘরানা ছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির বিকাশ, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন জয়। বিশেষ করে দেশের তরুণদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্নের পথে আত্মনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপ করছেন তিনি।
দেশ গঠনে তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে তিনি ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দুটি প্রোগ্রাম এরইমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এ ছাড়া তিনি তরুণ উদ্যোক্তা ও তরুণ নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্লাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলার’ সূচনা করেন। বর্তমানে বেশির ভাগ সময়েই দেশের বাইরে অবস্থান করতে থাকা সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে মতামত দেন। এরইমধ্যে দলীয় ঘরানায় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়েছে।
জন্মদিনের প্রাক্কালে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) আগারগাঁও’এ আইসিটি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পউটার কাউন্সিল কর্তৃক আইসিটি টাওয়ারে স্থাপিত স্টার্টআপ বাংলাদেশের অ্যাকসেলেরেটর ও দুটি ল্যাব উদ্বোধন করেন। ল্যাব দুটির মধ্যে একটি হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়্যারের কোয়ালিট টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন সেন্টার এবং অন্যটি হচ্ছে কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম ল্যাব। আর বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অ্যাকসেলেরেটরটিতে ২০২১ সালের মধ্যে এক হাজার উদ্ভাবনী পণ্য/সেবা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে স্টার্টআপদের প্রথম পদক্ষেপ। এ বিষয়ে জয় বলেন, এখন থেকে বাংলাদেশের কোথাও কোনো হ্যাকিং হলে আমরা নিজেরাই তা প্রতিরোধ করতে পারবো। এছাড়াও বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁ হোটেলে ৫-জি প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক উদ্বো ধনও করেন তিনি।