বৈষম্য বাড়ায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল মিলছে না
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১১-০৪ ২৩:১৬:২১
>> গ্রামে ও শহরে বৈষম্য ক্রমে বাড়ছে
>> মধ্যবিত্তের প্রকৃত আয় কমেছে
>> বছরে ৯৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে
>> ব্যাংকে খেলাপি ঋণ বাড়ছে
দেশের অর্থনীতির যে অগ্রগতি তা সুফল পাচ্ছে না সর্বসাধারণ। প্রবৃদ্ধির সুফল থেকে বঞ্চিত মোট জনশক্তির বড় অংশ। জিডিপির প্রবৃদ্ধি যে হারে বাড়ছে, সে অনুসারে বাড়ছে না কর্মসংস্থান। এ ধরনের বৈষম্য দেশ, অর্থনীতি, পরিবেশ, সমাজ ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। অন্যদিকে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানেও। মানহীন শিক্ষা কর্মসংস্থানে বড় বাধা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (বিআইডিএস) আয়োজিত সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে গণ বক্তৃতায় এসব বিষয়ে উঠে আসে। প্রয়াত অর্থনীতিবিদ আবদুল গফুর স্মরণে রোববার এ বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. কেএএস মুরশিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য দেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ ছাড়াও বক্তব্য দেন বিআইডিএসের রিসার্স ফেলো ড. বিনায়ক সেন, সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘২০১৬ সালে দেশের ধনী শ্রণির ৫ শতাংশ মানুষের আয়, মোট আয়ের ২৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। ২০১০ সালে যা ছিল ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। কিন্তু ২০১৬ সালে গরিব ৫ শতাংশ মানুষের আয় মোট আয়ের দশমিক ২৩ শতাংশ। কিন্তু ২০১০ সালে ৫ শতাংশ গরিবের আয় ছিল ৭৮ শতাংশ। এর মানে হলো ধনীদের আয় অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। বিপরীতে কমছে গরিবের আয়।’
দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে বৈষম্য ক্রমেই বাড়ছে। এটি শুধু সম্পদের ক্ষেত্রে নয়। আয় ও ভোগের ক্ষেত্রে রয়েছে বৈষম্য। সম্প্রতি যোগ হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুবিধা ও আঞ্চলিক বৈষম্য। কিন্তু উন্নয়নের উচ্ছ্বাসের প্রচারে বৈষম্য চিত্রগুলো নীতি নির্ধারকদের কাছে ওভাবে গুরুত্ব পায় না। এ ছাড়াও সরকারের উচ্চ মহল থেকে তথ্য অস্বীকার করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। এর প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। বর্তমানে দেশের এক তৃতীয়াংশ বেকার। যার মধ্যে ৮০ শতাংশই সাধারণ গরিব পরিবারের। তারা শিক্ষিত, কিন্তু ওই শিক্ষা নিম্নমানের।’
দেবপ্রিয় বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে মানুষের আয় বাড়ছে, এটি অবশ্যই ভাল দিক। কিন্তু এর সুবিধা সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার ‘
তিনি আরও বলেন, ‘৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু কর্মসংস্থানে তার প্রভাব নেই। প্রাতিষ্ঠানিক এ খাতে নতুন কর্মসংস্থান একেবারেই কম।’
ড. বিনায়ক সেন বলেন, ‘বৈষম্য নতুন কিছু নয়। তবে শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এটি ইতিবাচক দিক।’