হুমকির মুখে বই প্রকাশ ও একুশে বইমেলা

আপডেট: ২০১৫-১১-০৪ ১২:১৯:৫০


Book Fiarএতদিন অব্যাহতভাবে লেখকদের উপর হামলা চললেও এবার প্রকাশক হত্যা ও হামলার ঘটনায় হুমকির মুখে পড়েছে বই প্রকাশ। একইসঙ্গে আসন্ন একুশে বইমেলায়ও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন লেকক, প্রকাশক ও পাঠকরা।

ডয়েচে ভেলের একটি রিপোর্টে প্রকাশকদের এমন আশঙ্কার কথাই উঠে এসেছে।

প্রকাশকদের ভাষ্য, ‘আমরা আতঙ্কিত এই ভেবে যে বই প্রকাশ করে আবার কাকে প্রাণ হারাতে হয়।’ তাই অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন তারা।

প্রকাশনা সংস্থা মুক্তচিন্তার কর্ণধার শিহাব বাহাদুর বলেন, ‘নিহত দীপন এবং আহত টুটুল আমার বন্ধু। আজিজ সুপার মার্কেটে আমরা পাশাপাশি বই প্রকাশনার ব্যবসা করি দীর্ঘদিন ধরে। এই ঘটনার পর এখন আর অফিসে যাই না, ভয়ে আছি।’

তার কথায়, ‘সামনের বইমেলার কাজ আমরা আগেই শুরু করেছি। পাণ্ডুলিপি বাছাই করছি। নতুন পাণ্ডুলিপি আসছে। কিন্তু এখন চিন্তায় আছি কার বই প্রকাশ করে আবার বিপদে পড়ি। আমরা বিবেচনা করি ভালো বই, মুক্তচিন্তার ইস্যুগুলো নিয়ে। কিন্তু মুক্তচিন্তার ওপর তো আঘাত আসছে। এ কারণে এবার বইমেলা নিয়ে সংশয়ে আছি। কী বই প্রকাশ করতে পারবো? আদৌ পারবে কিনা জানি না।’

সংহতি প্রকাশনের কর্ণধার দীপক রায় বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা হত্যার মধ্য দিয়ে যদি বলতে চায়, কোন বই প্রকাশ করা যাবে আর কোন বই প্রকাশ করা যাবে না, তাহলে তো আমাদের হাত-পা বেঁধে দেয়া হলো। আমরা এই অবস্থা মেনে নিতে পারি না। প্রকাশক শুধু নয়, এর আগে লেখক-ব্লগারদের হত্যা করা হয়েছে। তাই এটা স্পষ্ট যে বই, মুক্তচিন্তা করেন যারা, লেখক-প্রকাশক সবাই এখন চাপাতির নীচে। এটা চলতে পারে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তবে আমাদেরও প্রতিবাদী হতে হবে। আমাদেরও মাঠে নামতে হবে। ঘরে বসে থাকলে চলবে না।’

তার কথায়, ‘অমর একুশের বইমেলাকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশে অধিকাংশ সৃজনশীল বই প্রকাশ হয়। কিন্তু সৃজনশীল প্রকাশকরা হামলা বা হত্যার শিকার হওয়ায় এবার বইমেলার কী হবে, তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।’

এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘ব্লগার হত্যার বিচারে শৈথিল্য কেন? – এ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। প্রশানের মধ্যে ধর্মান্ধ লুকিয়ে আছে কিনা, যদি থাকে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ব্লগার হত্যার বিচার হলে প্রশাকরা হত্যার শিকার হতেন না।’

ড. মিজান বলেন, ‘ব্লগার অভিজিৎ, ওয়াশিকুরের বাবা কি ছেলে হত্যার বিচার চাননি? তারা যদি বিচার পেতেন, তাহলে দীপনের বাবা আজ আক্ষেপ করে ‘বিচার চাই না’ – এ কথা বলতেন না। এটা তখনই হয় যখন বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়।’

সানবিডি/ঢাকা/এসএস