দশ টাকায় মিলছে ফুলকপি

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১১-১৬ ১৫:০৪:৫৩


মাসখানেক আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া ফুলকপি এখন মাত্র ১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ফুলকপির মতো অধিকাংশ সবজির দাম এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। তবে বেগুন, লাউ, বরবটি দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে দাম না বাড়লেও এখনও বাজারে সব থেকে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে গাজর ও টমেটো। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, বয়লার মুরগি, মাছ ও গরু-খাসির মাংসের। অবশ্য কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের সবজি কপি, শিম, মুলা, শালগম, লাউয়ের পাশাপাশি পালং শাক, লাল শাক, মুলা শাক বাজারে ভরপুর। এর মধ্যে ফুলকপির সরবরাহ সব বাজারে দেখা গেছে সব থেকে বেশি।
কারওয়ানবাজার গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা ১০০ পিস ফুলকপি আকার ও মান ভেদে বিক্রি করছেন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও এক হাজার টাকার মতো ছিল। অর্থাৎ কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারে এখন এক পিস ফুলকপির দাম পড়ছে পাঁচ থেকে সাত টাকা।
তবে বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা আকার ও মানভেদে প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি করছেন ১০ থেকে ৩০ টাকায়। এ বিষয় মো. রফিক নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন যে ফুলকপি ১০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, এক মাস আগেও এসব ফুলকপির পিস ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরেই বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। সব থেকে বেশি দাম কমেছে ফুলকপি ও শিমের তবে এ সপ্তাহে শিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যে শিম ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে এখন তা ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের মতো অধিকাংশ বাজারেই শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। খিলগাঁও-রামপুর অঞ্চলে গত সপ্তাহে শিমের কেজি বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এখন তা কিছুটা বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শান্তিনগর বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এ বাজারে এক কেজি শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় হয়েছে।
শিমের মতো দাম বেড়েছে লাউ, বেগুন ও বরবটির। গত সপ্তাহে রামপুরা অঞ্চলের বাজারগুলোতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
এদিকে গাজর আগের মতোই ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি। আর নতুন আসা কাঁচাটমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা কেজি।
সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. আনিস বলেন, শিম ও বেগুনের দাম কিছুটা বাড়লেও ফুলকপি ও মুলাসহ বেশিরভাগ সবজির দাম এখন বেশ কম। যারা বাজারে আসছেন তাদের প্রায় সবাই এক বা একাধিক ফুলকপি কিনছেন।
তিনি বলেন, এখন শিম, বেগুন ও লাউয়ের দাম কিছুটা বাড়লেও এটা বেশিদিন স্থায়ী হবে না। কয়েক দিনের মধ্যেই দাম কমে যাবে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পটল ও শালগম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহেও এ সবজি দুটির দাম এমনই ছিল। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ঢেঁড়স, করলা, ঝিঙা ও ধুন্দলের।
শীতের সবজির পাশাপাশি বাজারে এসেছে শাক পালং। বাজার ভেদে এক আটি পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা।লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। ১০-২০ টাকা আটি পাওয়া যাচ্ছে পুই শাক
আগের সপ্তাহের মতো বাজার ও মানভেদে এক পোয়া কাঁচা মরিচ (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের কেজিতে ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বয়লার মুরগি, গরু ও খাসির মাংস এবং মাছের দাম। বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাজারেই ইলিশ মাছ ভরপুর। ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। আর পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়। এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা পিস। আর ছোট আকারের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা।
আগের সপ্তাহের মতোই রুই মাছ বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪০০ টাকা কেজি। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা কেজি। শিং মাছ ৩০০-৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৬০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০-১৫০ টাকা, সরপুটি ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।