যত চাপাতি তত মঙ্গল
প্রকাশ: ২০১৫-১১-০৪ ২০:০৬:৪৬
উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে আমরা নানাকারণে আলাদা। পশ্চিমা দেশ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরেশিয়ার দেশ রাশিয়া যখন অস্ত্রবাণিজ্য, সমরাস্ত্র কারখানার দিকে মনোযোগী তখন আমরা মনোযোগী চাপাতি তৈরি ও ব্যবহারে।
একটা কথা বলা যায়- যত চাপাতি তত মঙ্গল।
বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে কামারেরা ( যারা লোহা পুড়িয়ে দেশীয় অস্ত্র তৈরি করেন) বাপ-দাদার প্রাচীন পেশা পরিবর্তন করেছে। ঢুকে গেছে অন্য পেশায়।
আমরা যদি চাপাতি তৈরি ও ব্যবহারে অধিকতর মনোযোগী হয় তাহলে দেশে অচিরেই কামার শিল্পে বিপ্লব ঘটে যাবে। অর্থনীতির অন্যতম নিদর্শন হবে এই কামার শিল্প। তখন ভাঙারি লোহার দাম বেড়ে যাবে। অর্থনীতির চাকা গতিশীল হবে। দেশ মধ্যম আয় থেকে উন্নত আয়ের হবে।
জঙ্গিরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তনে চাপাতি ও ছোরা ব্যবহার করছেন। পরোক্ষভাবে তারা কিন্তু কামার শিল্পের বিকাশে কাজ করছেন। এরা সাচ্চা দেশপ্রেমিক। যেমন সাচ্চা দেশপ্রেমিক ছাত্রলীগ কিংবা ছাত্রদল কিংবা ছাত্রশিবির।
বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা নামকরা কলেজে ছাত্রনেতাদের (সবাই না) বালিশ কিংবা বিছানায় হাত দিলে একটি করে চাপাতি পাওয়া যাবে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকার সময় আমার বিভিন্ন বন্ধুবান্ধব ( যারা নামে বন্ধু, রাজনীতিতে যুক্ত) চাপাতি নিয়ে ঘুরতেন। ক্যান্টিনে খাবার খেতে যাওয়ার সময় লুঙ্গির ভাঁজে তারা চাপাতি নিয়ে যেতেন, হল গেটে মারামারির সময় চাপাতি নিয়ে যেতেন। জঙ্গিরা যেমন লেখক-প্রকাশককে আক্রমণ করছেন, আমাদের ছাত্রনেতারা আক্রমণ করতেন সহপাঠীকে কিংবা হলের কোনো বড়ভাই কিংবা ছোটভাইকে।
এমনকি হলের গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাওয়ার সময় দা ব্যবহারের পরিবর্তে চাপাতি ব্যবহার করতেন ছাত্রনেতারা। করা হতো।
এখানে বলে রাখা ভালো-ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা কিন্তু চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাশকে হত্যা করেছিলেন। ছাত্রদলও চাপাতি ব্যবহার করে, ছাত্রশিবির করে।
সবাই সুযোগ পেলে চাপাতি ব্যবহার করে। এরা কামার শিল্পের বিকাশে কাজ করছেন। চাপাতি ব্যবহারে জঙ্গি ও ছাত্রনেতাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
জঙ্গিরা চাপাতি ব্যবহার করছে মানুষ মারছেন। ছাত্রনেতারা চাপাতি ব্যবহার করছে রক্তাক্ত করছেন অপর ছাত্রের দেহ। সুতরাং চোরে চোরে মাসতুতো ভাই।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ