ফুল খাতের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন জরুরী

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৮-১২-০৪ ১৭:৪৯:১৬


 

বাংলাদেশে ফুল শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং এ শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন এবং এ খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন আবশ্যক বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

বাংলাদেশে ফুল শিল্পের সম্ভাবনা নিরূপণের লক্ষ্যে ইউএসএইড’স এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস্ (এভিসি) প্রকল্প এবং বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি’র সহযোগিতায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আগামী ৬-৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিনদিনব্যাপী “ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাওয়ার এক্সিবিশন অ্যান্ড কনফারেন্স ২০১৮”-এর আয়োজন করেছে।

এ উপলক্ষে আজ ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই’র সভাপতি আবুল কাসেম খান জানান, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি)’র তথ্যমতে,

সারা পৃথিবীতে ফুলের বাজার প্রতিবছর ১০% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০১৮ সালে বৈশ্বিক বাজারে ফুলের রপ্তানির বাজার মূল্য প্রায় ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ফুল রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৮৬ হাজার মার্কিন ডলার, যেখানে বর্তমানে সার্বিকভাবে ফুলের বাজার মূল্য ৮০০- ১২০০ কোটি টাকা।

তিনি এ সম্ভাবনাময় শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এর সাথে জড়িত কৃষক ও উদ্যোক্তাদের স্বল্প হারে ঋণ সুবিধা প্রদান, আধুনিক প্রযুক্তি প্রাপ্তি ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রদানে, উন্নত ও নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ করা, ওয়্যারহাউজ ও কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ এবং সর্বোপরি অবকাঠামো উন্নয়ন একান্ত অবশ্যক বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, প্রয়োজনীয় হিমাগারের অভাবের কারণে আমাদের দেশে কৃষি খাতে উৎপাদিত নানাবিধ পণ্যের যোগ্য মূল্য থেকে উদ্যোক্তা ও কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ফুল খাতের বিকাশে হিমাগার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বাংলাদেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে “ওয়্যারহাউজ নির্মাণ” একান্ত আবশ্যক বলে অভিমত প্রকাশ করেন এবং “ওয়্যারহাউজ নির্মাণ” কে থ্রাস্ট সেক্টর হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইউএসএইড’র কনসালটেন্ট এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, কৃষি খাতের অগ্রগতির লক্ষ্যে বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে সরকারকেই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং তা হলেই দেশের বেসরকারীখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে।

তিনি জানান, বর্তমানে ২৩টি জেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে ৫০ জাতের ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ হচ্ছে এবং স্থানীয়ভাবে ফুলের বাজার মূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা।

ডিসিসিআই’র সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ইউএসএআইডি এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস্ (এভিসি) প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় আগামী ৬-৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিতব্য “ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাওয়ার এক্সিবিশন অ্যান্ড কনফারেন্স ২০১৮”-এ প্রায় ৭০টি স্টলে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তা তাদের ফুল ও ফুল সংশ্লিষ্ট পণ্য প্রদর্শন করবেন;

যেখানে থাইল্যান্ড, ভারত এবং নেপালের ১২টি স্টল থাকবে, পাশাপাশি ফ্লাওয়ার প্যারেড, বর্ণিল ফুলের বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রদর্শনী এবং ইনস্টলেশন, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, পুতুলনাচ, একক ও দ্বৈত সংগীতানুষ্ঠান, দলীয় নাচ এবং বিশেষ ত্রিমাত্রিক ভিডিওচিত্রের প্রদর্শনী থাকবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

তিনি আরোও জানান, আগামী  ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে অনষ্ঠিতব্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই ইভেন্টে “বাংলাদেশে ফুল খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা” ও “ফুল চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা” বিষয়ে দুটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, এফসিএ, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক হোসেন এ সিকদার, ইমরান আহমেদ, মামুন আকবর, মোহাম্মদ বাশীর উদ্দিন, এস এম জিল্লুর রহমান, ইউএসএইড’স এগ্রিকালচারাল ভ্যালু চেইনস্ (এভিসি) প্রকল্পের চিফ অব পার্টি লি রোজনার, ডেপুটি চিফ অব পার্টি বানি আমিন, বাংলাদেশ ফুল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে আগত সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।