সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১২-১৪ ২০:০৪:১২
বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো টাইগাররা। সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাশরাফি-তামিম-সাকিব-মুশফিকরা তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে। এর আগে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় তোলার পর দ্বিতীয় ম্যাচে জিততে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ, হেরেছিল শেষ ওভারে।
শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে উইন্ডিজদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকারের দারুণ ইনিংসে স্বাগতিকরা ৩৮.৩ ওভারেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে। ২-১ এ সিরিজও জেতে। এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও জিতেছিল টাইগাররা। শেষ ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হন ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করা মেহেদি হাসান মিরাজ আর সিরিজ সেরা হন ক্যারিবীয়ান তারকা দুটি সেঞ্চুরি করা শাই হোপ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান তোলে সফরকারীরা। ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের দরকার হয় ১৯৯ রান। ১০৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন শাই হোপ। মারলন স্যামুয়েলস (১৯), কেমো পল (১২) ও ড্যারেন ব্রাভো (১০) ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। উইন্ডিজ ইনিংসের শুরুতেই উইকেটে হানা দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। চন্দরপল হেমরাজকে ৯ রানে ফেরান তিনি। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৫ রানে মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন উইন্ডিজ এই ওপেনার (১৫/১)। এরপর উইকেটে আসেন ড্যারেন ব্রাভো। দ্বিতীয় উইকেটে শাই হোপের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়ে দলীয় ৫৭ রানে মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ১০ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান (৫৭/২)।
এরপর হোপের সঙ্গে যোগ দেন মারলন স্যামুয়েলস। কিন্তু সাইফউদ্দিনের করা ২৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান (৯৬/৩)। এক রানের ব্যবধানে শিমরন হেটমেয়ারকে ফেরান মিরাজ। তার করা ২৪তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবির শিকার হয়ে শূন্য হাতে ফেরেন উইন্ডিজ এই মিডলঅর্ডার (৯৭/৪)। এরপর আবারো উইকেটে হানা দেন মিরাজ। তার করা ২৬তম ওভারের শেষ বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১ রানে ফেরেন অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল (৯৯/৫)।
দলীয় ১৩৬ রানের মাথায় বিদায় নেন রোস্টন চেজ। সাকিবের বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ৮ রান, ষষ্ঠ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরপর আবারও উইকেটে হানা দেন সাকিব। তার করা ৩৮তম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রান করা এবং ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। এরপর উইকেট শিকারে যোগ দেন মাশরাফি। দলীয় ১৭১ রানে তার করা বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ১৩ রান করা কেমো পল। এরপর আবারও উইকেট নেন ম্যাশ। তার বলে এলবির শিকার হয়ে ৩ রানে ফেরেন কেমার রোচ। এরপর আর উইকেট হারায়নি উইন্ডিজরা।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। চার উইকেট নিতে ১০ ওভারে ২৯ রান খরচ করতে হয়েছে তাকে, আর এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। এছাড়াও দুটি করে উইকেট নেন মাশরাফি ও সাকিব। আর একটি উইকেট নেন সাইফউদ্দিন।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তবে দলীয় ৪৫ রানে কেমো পলের বলে রোভমান পাওয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ২৩ রানে ফেরেন লিটন। এরপর তামিমের সঙ্গে জুটি গড়েন সৌম্য সরকার। তামিম ওয়ানডের ৪৪তম ফিফটি তুলে নেন। ব্যাক-টু-ব্যাক ফিফটি করেন তামিম, টানা দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন ৬২ বলে। ওয়ানডেতে সপ্তম ফিফটির দেখা পান সৌম্য সরকার। টপ অর্ডারে জায়গা ফিরে পেয়ে যেন নিজেকেও ফিরে পান সৌম্য, ফিফটি স্পর্শ করেন ৬২ বলে। দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ও সৌম্যর জুটিতে আসে শতরান। ২০.৫ ওভারে দলীয় শতক স্পর্শ করে টাইগাররা।
১৩১ রানের জুটি গড়ে আউট হন সৌম্য সরকার। কেমো পলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৮১ বলে ৮০ রান। তাতে ছিল পাঁচটি চার আর পাঁচটি ছক্কার মার। দলীয় ১৭৬ রানের মাথায় বাংলাদেশ দুই উইকেট হারায়। তামিম ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়েন। ১০৪ বলে ৯টি চারের সাহায্যে করেন অপরাজিত ৮১ রান। মুশফিকুর রহিম দুই চার, এক ছক্কায় ১৪ বলে করেন অপরাজিত ১৬ রান। ৩৮.৩ ওভারেই টাইগাররা ম্যাচ জিতে নেয়।
সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে দুটি পরিবর্তন আসে বাংলাদেশের। ইমরুল কায়েসের বদলে এই ম্যাচে জায়গা পান মোহাম্মদ মিঠুন। আর রুবেল হোসেনের জায়গায় সুযোগ পান সাইফউদ্দিন। উইন্ডিজ দলে আসে একটি পরিবর্তন। ওশান থমাসের জায়গায় সুযোগ পান ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। এই ম্যাচে জয় নিয়ে টানা তৃতীয় সিরিজ জিতলো মাশরাফি-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ’রা। এই ম্যাচ দিয়েই সিলেটের মাঠে আন্তর্জাতিক ওয়ানডের