গ্রেফতার করতে পারবে সেনাবাহিনী: সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১২-১৫ ২০:৪৩:০৬
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী প্রয়োজন হলে গ্রেফতার করতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া হবে না। তবে, তারা গ্রেফতার করতে পারবে। তাদের সেই ক্ষমতা দেওয়া আছে।
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সেনাবাহিনীর গ্রেফতার প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, যদি ম্যাজিস্ট্রেট থাকে বা কোনও একটি এলাকা/কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে, ইমিডিয়েট হস্তক্ষেপ করার দরকার হয় তাহলে তারা গ্রেফতার করতে পারে। এটা আইনেই বলা আছে। সিআরপিসিতে আইনে যেভাবে আছে সেভাবেই তারা দায়িত্ব পালন করবে।
ভোটকক্ষে সরাসরি সম্প্রচার নয়
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, ভোটের সময় ভোটকক্ষের ভেতরে গিয়ে কোনও টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে না। তবে, ভোটকক্ষে ছবি তুলে বেরিয়ে এসে ভোটকেন্দ্র এলাকা থেকে (বারান্দা বা মাঠ থেকে) সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে। সাংবাদিকদের প্রতিটি কেন্দ্রে সীমিত আকারে যেতে হবে কারণ একসঙ্গে অনেকে গেলে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটে। সেক্ষেত্রে কতজন একত্রে যেতে যেতে পারবেন তা নির্বাচন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ধারণ ক্ষমতা বিবেচনা করে অনুমোদন দেবেন।
তিনি বলেন, ভোটকক্ষে কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সাংবাদিকরা মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করে ছবি তুলতে পারবেন। কিন্তু ভোটকক্ষে মোবাইলে কথা বলতে পারবেন না। সাংবাদিকদের মতো নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বিষয়েও একই ধরনের নির্দেশনা মানতে হবে।
একসঙ্গে কতজন সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবেন এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারের ব্যবস্থাপনা মানতে হবে। তার কক্ষের ধারণ ক্ষমতা বিবেচনা করে যতজনকে অনুমোদন দেন সেটা অনুসরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ ও ইন্টারনেটের গতি কমানোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনে কতজনকে সাজা দেওয়া হয়েছে এই তথ্য নেই। আমাদের কাছে আচরণবিধি ভঙ্ঘের যেসব অভিযোগ আসছে তা ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেবো। কিছু রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাবো। তারা এগুলো স্থানীয়ভাবে দেখবে। স্থানীয়ভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রিটার্নিং অফিসার তার ব্যবস্থা নেবেন। এছাড়া নির্বাচনি ম্যজিস্ট্রেট আছে তারাও দেখবে।
ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ড. কামাল হোসেনের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। একজন সিনিয়র সিটিজেন ও একজন প্রখ্যাত ব্যক্তি তিনি। তার ওপর হামলা হওয়াটা কখনোই প্রত্যাশিত নয়, কাঙ্ক্ষিত নয়। এক্ষেত্রে ফৌজদারি অপরাধ হয়েছে। ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে যেভাবে ব্যবস্থা হয় তা হবে। তারা আমাদের কাছে বিষয়টি দেখার জন্য আবেদন করেছে। আমরা এটা দেখার জন্য ইলেকট্রোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছে পাঠাবো। তারা রিপোর্ট দিলে সেই অনুসারে ব্যবস্থা হবে।
সারাদেশে গ্রেফতার হয়রানির অভিযোগ তুলছে বিরোধী দলগুলোর প্রার্থীরা। এ বিষয়ে ইসির অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল-পরশুর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আইজিকে চিঠি দেবো- তারা যেন কোনও প্রার্থী বা রাজনীতিককে কোনও ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃত্ত না থাকলে বিনা ওয়ারেন্টে বা নিষ্প্রয়োজনে হয়রানি না করে।
বিভিন্ন স্থানে গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অহেতুক কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা বলা যাবে না। হয়তো তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা ও ওয়ারেন্ট থাকতে পারে। সেই কারণে তাদের গ্রেফতার করে থাকতে পারে। এটা তাৎক্ষণিক বলতে পারবো না।
এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা মনে করি লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালাতে পারছে। প্রচারণায় তাদের কোনও বাধা নেই। স্থানীয়ভাবে ফৌজদারি অপরাধ ঘটলে সেক্ষেত্রে তারা মামলা করবে বা আমাদের কাছে পাঠাবে।