পোশাক কারখানা স্থানীয় সংস্থার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে থাকবে অ্যালায়েন্সের

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১২-১৭ ১৩:০০:৪৫


বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার পর স্থানীয় সংস্থার মাধ্যমে আওতাভুক্ত কারখানাগুলোয় নিরাপত্তা মানদণ্ড পর্যবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও হেল্পলাইন উন্নয়নকাজ অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তর আমেরিকাভিত্তিক পোশাক ক্রেতা ও শ্রম অধিকার সংস্থার জোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি। সম্প্রতি নিজেদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশকালে জোটটি এ কথা জানিয়েছে।

পঞ্চম ও চূড়ান্ত বর্ষে অ্যালায়েন্সের আওতাধীন কারখানাগুলোর নিরাপত্তা ফলাফল তুলে ধরে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণ পরিপূর্ণভাবে সম্পাদন ও অ্যালায়েন্স অধিভুক্ত কারখানার ১৫ লাখের বেশি শ্রমিককে ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন সুবিধা প্রদানের নানা বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।

অ্যালায়েন্স আশা করছে, তাদের অধীনে যে নিরাপত্তা মানদণ্ড অর্জন হয়েছে, তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। জোটটি জানিয়েছে, তারা তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও হেল্পলাইন সেবা স্থানীয় অংশীদারদের কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছে। অ্যালায়েন্সের সদস্য অধিকাংশ ব্র্যান্ডই তাদের জন্য পণ্য উৎপাদনকারী বাংলাদেশী কারখানাগুলোয় স্থানীয় সংস্থ্যার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা মানদণ্ড পর্যবেক্ষণ, প্রশিক্ষণ প্রদান ও হেল্পলাইন উন্নয়নকাজের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস মরিয়ার্টির বরাত দিয়ে জোটটি জানিয়েছে, পাঁচ বছরে অ্যালায়েন্স, তাদের সদস্য ব্র্যান্ডগুলো ও অধিভুক্ত কারখানার মালিকরা বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা উন্নয়নে অভাবিত অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ অগ্রগতি ধরে রাখতে একটি চলমান উদ্যোগ প্রয়োজন। অ্যালায়েন্স চলে যাওয়ার পর এর সদস্য ব্র্যান্ডগুলোর কাছে বিষয়টিই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।

নিজেদের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অ্যালায়েন্স জানিয়েছে, পর্যবেক্ষণের আওতাধীন কারখানাগুলোর ৯৩ শতাংশ সংস্কারকাজ সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে জীবনের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। অ্যালায়েন্স অধিভুক্ত ৪২৮টি কারখানা তাদের সংশোধনী কর্মপরিকল্পনায় উল্লিখিত সব সংস্কার সম্পন্ন করেছে। প্রায় ১৬ লাখ শ্রমিক অগ্নিকাণ্ডের জরুরি মুহূর্তে নিজেদের রক্ষা করার কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অ্যালায়েন্স অধিভুক্ত কারখানাগুলোর বাইরে অন্যান্য কারখানায়ও এ প্রশিক্ষণের বিস্তার ঘটানোর লক্ষ্যে অ্যালায়েন্স একটি স্থানীয় অংশীদার গঠন করেছে। ২৮ হাজার নিরাপত্তাকর্মী অগ্নিনিরাপত্তা ও জরুরি ভিত্তিতে ভবন ত্যাগের প্রক্রিয়া বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

অ্যালায়েন্স জানিয়েছে, ১৫ লাখের বেশি শ্রমিক হেল্পলাইন ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন, যা ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। এ হেল্পলাইন স্থানীয় সংস্থা ফুলকির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিগগিরই এ সেবা দেশজুড়ে সব তৈরি পোশাক কারখানায় ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া ১৮১টি শ্রমিক নিরাপত্তা কমিটি গঠন করা হয়েছে। ফলে শ্রমিকরা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাদের কারখানায় বিদ্যমান নিরাপত্তাসংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারবেন।