নতুন ভবনের জায়গা কেনার আগ্রহ নেই বিজিএমইএর
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১২-১৭ ১৬:৫১:৪৮
উত্তরার তৃতীয় পর্বে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। নির্মাণাধীন সেই ভবনের জায়গা (স্পেস) বিক্রি ও ইজারা দেওয়ার জন্য গত মার্চ থেকে চেষ্টা করছে বিজিএমইএ। তবে সদস্যদের কাছ থেকে সংগঠনটি ৯ মাসেও প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া পায়নি।
জমির স্বত্ব না থাকা ও জলাধার আইন লঙ্ঘন করায় রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি উচ্চ আদালতের নির্দেশে আগামী এপ্রিলের পর ভেঙে ফেলতে হবে। এই ভবনের কার্যক্রম সরিয়ে নিতে উত্তরায় তৃতীয় পর্বে ১১০ কাঠা জমির ওপর ২টি বেসমেন্টসহ ১৫ তলা ভবন নির্মাণ করবে বিজিএমইএ। উত্তরায় নতুন ভবনটি প্রায় সাড়ে ৪ লাখ বর্গফুট আয়তনের হবে। নির্মাণকাজ প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও ভবনের জায়গা বিক্রির জন্য গত ২২ মার্চ আবেদন আহ্বান করা হয়। এতে বর্তমান ভবনের জায়গা যেসব প্রতিষ্ঠান কিনেছিল, নতুন ভবনের জায়গা বরাদ্দে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। উত্তরায় নতুন ভবনের প্রতি বর্গফুটের দাম ধরা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন ভবনের বিক্রিযোগ্য ৩ লাখ বর্গফুট জায়গার মধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশ কেনার জন্য আবেদন করেছে ২০-২২টি প্রতিষ্ঠান। বাকি জায়গা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না সদস্যরা। এর কারণ হচ্ছে, বিজিএমইএ ও রাজউকের মধ্যে স্বাক্ষরিত ইজারার দলিলের একটি ধারা। সেটির জন্য ভবনের জায়গা বরাদ্দ ও হস্তান্তর করার ক্ষেত্রে জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে বিজিএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির গতকাল রোববার রাতে বলেন, ‘যে ধারাটি নিয়ে জটিলতা হয়েছিল, তা বাতিল করতে আমরা রাজউকে আবেদন করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত ১২ ডিসেম্বর সেটি বাতিলও করেছে রাজউক।’ তিনি বলেন, ‘যে সমস্যার জন্য আমাদের সদস্যরা নতুন ভবনের জায়গা কিনতে আগ্রহ কিছুটা কম দেখাচ্ছিলেন, সেটি বর্তমানে আরও নেই।’
মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘উত্তরায় নির্মাণাধীন বিজিএমইএর নতুন ভবনের দোতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা নতুন ভবনের কাজ শেষ করে উঠে যেতে পারব।’
কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনের মোট স্পেস ২ লাখ ৬৬ হাজার বর্গফুট। বিজিএমইএ ব্যবহার করে চারটি তলা। বাকি জায়গা দুটি ব্যাংকসহ ৪০টির মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। ভবনের ওপরের দুই তলা নিয়ে বিলাসবহুল ‘অ্যাপারেল ক্লাব’ করা হয়েছে। সেখানে বিজিএমইএর সদস্যদের জন্য সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার, রেস্টুরেন্ট, সভাকক্ষ আছে। মূল ভবনের নিচে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য অতিরিক্ত দুটি তলা আছে। একটি মিলনায়তনও আছে।
দুটি ব্যাংকসহ প্রায় ৪০টি প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএর বর্তমান ভবনের জায়গা কিনলেও আইনি জটিলতার কারণে তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেয়নি বিজিএমইএ। তবে উত্তরায় নতুন ভবনের স্পেস ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি আগের ভবনের স্পেস ক্রয়ে যে অর্থ তারা দিয়েছিল, তা সমন্বয় করা হবে। গত মার্চে বিজিএমইএর বোর্ড সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। ভাঙার সময় আগামী বছরের ১২ এপ্রিল শেষ হবে।