আরও দুদিন মেঘ–বৃষ্টি তারপর শীত
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০১৮-১২-১৮ ১৬:২৭:০৭
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফেথাই’ সমুদ্রেই দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তারপর গতকাল সোমবার অপরাহ্ণে অনেকটা দুর্বল হয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে আছড়ে পড়ে ভারতের অন্ধ্র উপকূলে।
বঙ্গোপসাগরে গত তিন মাসে তিনটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবরে ‘তিতলি’, নভেম্বরে ‘গজ’; এরপর ‘ফেথাই’। তিনটিই আঘাত হেনেছে বঙ্গোপসাগরের ভারতীয় উপকূলে।
বাংলাদেশের উপকূলের দিকে না এলেও ঘূর্ণিঝড় ফেথাই-এর প্রভাবে গত রোববার রাত থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃষ্টির রেশ এবং কবলিত এলাকা কিছুটা বেড়েছে। এই বৃষ্টি আরও দু-এক দিন হতে পারে। এরপর শীত নামার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র।
আবহাওয়া অধিদপ্তরে কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞরা বলেন, অপস্রিয়মাণ ঘূর্ণিঝড় ফেথাই-এর প্রভাবে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় সারা দেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টিও হতে পারে।
এই মেঘ-বৃষ্টির কারণে আজ দিনের বেলা একটু শীত শীত অনুভূতি থাকতে পারে। তবে রাতের বেলা তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশিই থাকবে। আগামীকাল বুধবার নাগাদ আকাশ মেঘমুক্ত হতে থাকবে। পৌষের আকাশে দেখা যাবে সোনালি রোদের ঝিলিক। তখন তাপমাত্রা কমতে থাকবে। শীত পড়তে শুরু করবে।
ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য তৈরি আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৪ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ফেথাই-এর কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে হবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে গভীর সাগরে না গিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি চলাচল করতে হবে। কারণ, উত্তর বঙ্গোপসাগর যথেষ্ট উত্তাল রয়েছে।
নভেম্বর-ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মৌসুম। এই ঝড় প্রবল হলে জান-মাল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়। আর ফেথাই-এর মতো হলে দু-এক দিনের জন্য জনজীবনে কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি করে। বৃষ্টি বেশি হলে পাকা ধানের কিছু ক্ষতি হয়। পাশাপাশি রবিশস্যের মাঠ অনেক সমৃদ্ধ হয়। মৌসুমি শাকসবজির ফলন বাড়ে।
ঘূর্ণিঝড় ফেথাই জনজীবনে তেমন কোনো সমস্যা সৃষ্টি করেনি। পাকা ধানের খেতেও তেমন কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলেনি। তবে ফেথাই-এর প্রভাবে সামান্য যে বৃষ্টি হয়েছে, রবিশস্যের মাঠে তার সুফল পাবেন কৃষক।