ছাত্র-ছাত্রী ২২০, বেঞ্চ ৫!

আপডেট: ২০১৫-১১-১৪ ১১:২৪:৩৯


gafargaon pic-02_90696ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাইথল ইউনিয়নের নেওকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে ২২০ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫টি বেঞ্চ। এছাড়াও বিদ্যালয়ে স্বর্ণা আক্তার ও ছাবিনা ইয়াছমিন নামে দু’জন শিক্ষক কর্মরত। এই দু’জনের মধ্যে স্বর্ণা আক্তার প্রধান শিক্ষকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করায় তাকে অধিকাংশ সময়েই বিদ্যালয়ের কাজে বাইরে থাকতে হয়। ফলে মূলত একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে ২২০ শিক্ষার্থীর পাঠদান।

এদিকে শ্রেণী কক্ষে পর্যাপ্ত বেঞ্চ না থাকায় বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীকেই বই হাতে দাঁড়িয়ে ও মেঝেতে বসে পাঠ নিতে হচ্ছে।

বিদ্যালয় ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯১৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৬৫ সালে ৪ কক্ষের একটি আধাপাকা ভবন নির্মিত হয়। ভবনটির অবস্থা এখন জরাজীর্ণ। এর আগে দু’দফা ভূমিকম্পে ভবনটির অসংখ্য স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণীতে ৪৫, প্রথম শ্রেণীতে ৫০,  দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৩৭, তৃতীয় শ্রেণীতে ৩৫, চতুর্থ শ্রেণীতে ২৮ ও পঞ্চম শ্রেণীতে ২৫ শিক্ষার্থী অধ্যয়ণরত। একটি বেঞ্চে ৪ জনের বেশি বসা সম্ভব নয়। সে হিসেবে বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫৫টি বেঞ্চ থাকার প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র ৫টি। ফলে বই হাতে দাঁড়িয়ে ও মেঝেতে বসে পাঠদান নিতে হচ্ছে শিশুদের। আর তাদের পাঠদান করাচ্ছেন মাত্র দু’জন শিক্ষক।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণীতে ২৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষক স্বর্ণা আক্তার। কিন্তু ওই শ্রেণীতে একটি বেঞ্চ থাকায় বাকি শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে ও মেঝেতে বসে পাঠ নিচ্ছে।

সহকারী  শিক্ষক ছাবিনা ইয়াছমিন জানান, প্রায় সময়েই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক স্বর্ণা আক্তারকে অফিসের কাজে গফরগাঁওয়ে চলে যেতে হয়। তখন একা আমার পক্ষে ২২০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান তো দূরের কথা, এদের সামলানোই কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) স্বর্ণা আক্তার বলেন, প্রায় ৫০ বছরের পুরনো বিদ্যালয় ভবনটি এখন জরাজীর্ণ। ঝড়ে ভবনটির টিনের চালা থেকে কয়েকটি টিন উড়ে গেছে। ভূমিকম্পে দেখা দিয়েছে অসংখ্য ফাটল। গত এক বছর আগে একাধিকবার নতুন ভবনের জন্য আবেদন করেও কোন ফল পাইনি। এছাড়াও শিক্ষক ও বেঞ্চ সংকটে শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

গফরগাঁও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষক ও বেঞ্চের ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা করবেন বলে জানান।

সানবিডি/ঢাকা/রাআ