বাজেটে বেকার তরুণদের জন্য ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাব

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-১১ ১০:৫৫:৪৫


দেশের অসংখ্যা শিক্ষিত বেকার তরুণদের জন্য সুখবর থাকছে নতুন বাজেটে। এবারের বাজেটে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বেকার তরুণরা যাতে সহজে ব্যবসা শুরু করে স্বাবলম্বী হতে পারেন, সে জন্য আলাদা একটি তহবিল গঠনের প্রস্তাব করা হচ্ছে এবারের বাজেটে। ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ নামে এতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, যেসব যুবক ব্যবসা শুরু করতে চাইবেন, তাদের প্রাথমিক পুঁজি সরবরাহ করা হবে এই তহবিল থেকে। দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের জন্য সবসময় বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাজেটে তরুণদের জন্য সরাসরি সহায়তার এমন উদ্যোগ এবারই প্রথম। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রস্তাবিত ফান্ড কীভাবে পরিচালনা করা হবে, কত টাকা দেওয়া হবে, ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে নাকি অনুদান দেওয়া হবে, এসব বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে। ওই নীতিমালার ভিত্তিতে এই সহায়তা দেওয়া হবে। বাজেট ঘোষণার পর এটি চূড়ান্ত করা হবে। সূত্র বলেছে, প্রাথমিকভাবে আসন্ন বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। পরে চাহিদা বাড়লে টাকার অঙ্ক আরও বাড়ানো হবে।

অর্থনীতিবিদসহ উদ্যোক্তারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, তরুণরা হচ্ছে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এবং উন্নয়ন পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু। সহজে পুঁজি পেলে তারা উৎসাহিত হবেন এবং কর্মসংস্থান অনেক বাড়বে। জানা যায়, জনসংখ্যার দিক থেকে বর্তমানে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। কারণ মোট জনসংখ্যার বড় একটি অংশ হচ্ছে তরুণ, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯। অর্থনীতিবিদদের মতে, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য দরকার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এটা সম্ভব হবে কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে। তারা যাতে সহজে ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে জন্য বাজেটে প্রয়োজনীয় নীতি ও সহায়তা দিতে হবে। উল্লেখ্য, প্রতিবছর প্রায় ২০ লাখ লোক শ্রমবাজারে আসে। তাদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি করাই হবে সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে তরুণ বেকারের হার বাড়ছে। মূলত বেসরকারি বিনিয়োগ স্থবির থাকায় নতুন কর্মসংস্থান তেমন হচ্ছে না। এ জন্য বেকার বাড়ছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়লে কাজের সুযোগ বাড়ে। কাজ পেলে আয় বাড়ে। সেই সঙ্গে বাড়ে জীবনযাত্রার মান। তিনি মনে করেন, পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না থাকায় মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির সুফল সবাই পাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, তরুণদের কর্মসংস্থানমুখী করতে প্রস্তাবিত ফান্ড গঠন করা হচ্ছে। সরকার আশা করছে, এই তহবিল থেকে সহায়তা করা হলে নতুন নতুন তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম বলেন, এসডিজি অর্জন, উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার মতো অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তরুণরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য তাদের কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের সহজ ব্যবস্থা করে দিতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান বলেন, তরুণরাই ভবিষ্যৎ। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসা করতে চাইলে অর্থায়ন করতে হবে। তাদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ দিতে হবে।