পাঁচ মাসে ওয়ালটনের ফ্রিজ বিক্রি ৭৭ শতাংশ ও মার্সেলের ১৩৭ শতাংশ বেড়েছে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-২১ ০৯:১১:২২


চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি থেকে মে) ওয়ালটন ফ্রিজ বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭৭ শতাংশ। এ সময় সারা দেশে ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ ইউনিট। আগের বছর একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল পাঁচ লাখ ৯ হাজার ১২৯ ইউনিট। সূত্রমতে, ২০১৯ সালে ওয়ালটনের টার্গেট ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রি করা। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘১৯ এ ২০’। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে মে মাসে ৮ লাখ ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল। বিপরীতে এই সময়ে ওয়ালটনের ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ৯ লাখ ২ হাজার ৬৪৮ ইউনিট। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক লাখের বেশি ফ্রিজ বিক্রি করেছে বাংলাদেশী মাল্টিন্যাশনাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্র্যান্ড ওয়ালটন।
ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ও ফ্রিজ বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেন, স্থানীয় বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে গ্রাহকপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ওয়ালটন ফ্রিজ। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ ভাগই পূরণ করছে ওয়ালটন। মার্কেট শেয়ার চলতি বছর আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
এর পেছনে তিনি যুক্তি দেখান, এ বছর বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের নতুন মডেলের ইনভার্টার ও গ্লাস ডোরের ফ্রস্ট, নো-ফ্রস্ট ও ডিপ ফ্রিজ বাজারে ছেড়েছে ওয়ালটন। এসব ফ্রিজের দাম যেমন কম, তেমনি মানও খুব উন্নত। ফ্রিজ কম্প্রেসরের গ্যারান্টি সুবিধা আরো দুই বছর বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্রেষ্টত্যের আতœবিশ্বাসে ১ বছরের রিপ্লেসমন্টে গ্যারান্টি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় ফ্রিজের ক্রেতাদের নতুন গাড়ি, হাজার হাজার পণ্য ফ্রি, কোটি কোটি টাকার ক্যাশ ভাউচারসহ অসংখ্য সুবিধা দেয়া হয়েছে। ফলে, বছরের শুরু থেকে প্রতিমাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রয়োত্তর সেবাকে অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় আনতে ডিজিটাল কাস্টমার ডাটাবেজ তৈরি করছে ওয়ালটন। এজন্য সারা দেশে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন। এখন চলছে সিজন ফোর। এর আওতায় দেশের যে কোনো ওয়ালটন শোরুম থেকে ফ্রিজ কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পেতে পারেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ও ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর মাশরাফি বিন মর্তুজার অটোগ্রাফযুক্ত গোল্ড এডিশন ক্রিকেট ব্যাট ও বল। পেতে পারেন হাজার হাজার টিভিসহ অসংখ্য পণ্য ফ্রি। এছাড়াও থাকছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ।
উল্লেখ্য, এর আগে ঈদ ও বিশ্বকাপ উপলক্ষে গত রোজায় ক্রেতাদের ফ্রিজ কিনলে নতুন গাড়ি পাওয়ার সুযোগ দিয়েছিল ওয়ালটন। সেসময় নতুন গাড়ি পেয়েছিলেন বেশ কয়েকজন ক্রেতা।
ওয়ালটন নির্বাহী পরিচালক উদয় হাকিম জানান, ফ্রিজ বিক্রিতে প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। প্রবৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে চলতি বছরেও। এ বছর ২০ লাখ ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রথম ৫ মাসেই ৯ লাখের বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। আসছে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম কোরবানির ঈদ। সারা বছরের মোট ফ্রিজ বিক্রির অর্ধেকের বেশি হয় এ সময়। আশা করছি, কোরবানি ঈদের মধ্যেই এ বছরের ফ্রিজ বিক্রির টার্গেট পূরণ হয়ে যাবে। কেননা, স্থানীয় বাজারে ওয়ালটন ফ্রিজ এখন হটকেক। বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় বাজারে ১৩৭ মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট, ডিপ ফ্রিজ ও বেভারেজ কুলার ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১০২ মডেলের ফ্রস্ট ও ২১ মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর, ১২ মডেলের ফ্রিজার এবং ২ মডেলের বেভারেজ কুলার।

৫ মাসে মার্সেল ফ্রিজে ১৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি:
সাশ্রয়ী মূল্য, কম বিদ্যুৎ খরচ, অসংখ্য বৈচিত্র্যময় মডেল, দীর্ঘস্থায়ী সেবা ও গ্রাহকবান্ধব সুবিধা থাকায় বাজারে ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাচ্ছে মার্সেল ব্র্যান্ডের ফ্রিজ। ফলে, চলতি বছরে প্রথম ৫ মাসে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত মার্সেলের ফ্রিজ বিক্রিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১৩৭ শতাংশ। এদিকে এবারের রোজায় গতবারের চেয়ে দেড়গুণ বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানটির।
সূত্রমতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে ৭২ হাজার ৯৪৭ ইউনিট ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে মার্সেলের। বিপরীতে চলতি বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ৯৪ ইউনিট। সে হিসাবে গত ৫ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৩৭ শতাংশ বেশি ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। এবারের রোজায় সারা দেশে তাদের ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে ৩৩ হাজার ৬৯৯ ইউনিট। যা কিনা গত রোজায় ফ্রিজ বিক্রির তুলনায় দেড়গুণেরও বেশি।
এদিকে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-৪ এর আওতায় ফ্রিজের ক্রেতাদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে মার্সেল। সারা দেশে মার্সেলের যে কোনো শোরুম থেকে ফ্রিজ কিনে রেজিস্ট্রেশন করলেই ক্রেতারা পেতে পারেন টিভিসহ হাজার হাজার পণ্য ফ্রি। এছাড়াও রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার সুযোগ। ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালীন প্রতিদিনই অসংখ্য ক্রেতা মার্সেল ফ্রিজ কিনে এসব সুবিধা পাচ্ছেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
মার্সেলের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, এবছর স্থানীয় বাজারে ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে আশাতীত। প্রতিমাসেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। এর পেছনে বিশেষ অবদান রাখছে বেশকিছু সময়োপযোগি উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা। এসবের মধ্যে রয়েছে ফ্রিজে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার ও গ্লাস ডোরের নতুন মডেল যুক্ত করা, কম্প্রেসরের ১২ বছরের গ্যারান্টি সুবিধা ঘোষণা, ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট সুবিধাসহ দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবার নিশ্চয়তা দেয়া ও ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের আওতায় ক্রেতাদের বাড়তি সুবিধা প্রদান।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মান যাচাইকারি সংস্থা নাসদাত ইউনিভার্সাল টেস্টিং ল্যাব থেকে মান নিশ্চিত হয়ে প্রতিটি ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হচ্ছে। মার্সেল ফ্রিজে ব্যবহৃত হচ্ছে ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজি, গ্লাস ডোর, ন্যানো হেলথ কেয়ার ও এন্টি ফাংগাল ডোর গ্যাসকেট ইত্যাদি প্রযুক্তি। এর সঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্য এবং কিস্তি সুবিধা থাকায় দেশের বাজারে মার্সেল ফ্রিজের গ্রাহকপ্রিয়তা বাড়ছে উল্লেখযোগ্যহারে।
মার্সেল ফ্রিজের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর স্থানীয় বাজারে ৯৬ মডেলের ফ্রস্ট, নন-ফ্রস্ট, ও ডিপ ফ্রিজ বা ফ্রিজার ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৭৯ মডেলের ফ্রস্ট, ৫ মডেলের নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর ও ১২ মডেলের ফ্রিজার।
মার্সেল ফ্রস্ট ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে চোখ ধাঁধানো ডিজাইনের ৩১ মডেলের গ্লাস ডোর, ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তির ৩ টি মডেলসহ বিএসটিআই’র ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিং প্রাপ্ত রেফ্রিজারেটর ফ্রিজ। নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটরের মধ্যে রয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তির ৫৬৩ লিটারের সাইড বাই সাইড গ্লাস ডোর ও ৪৩০ লিটারের বিএসটিআই’র ‘ফাইভ স্টার’ এনার্জি রেটিং প্রাপ্ত রেফ্রিজারেটর।
কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রাহকরা মার্সেল ফ্রিজের কম্প্রেসরে ১২ বছরের গ্যারান্টি সুবিধার পাশাপাশি স্পেয়ার পার্টস এ পাচ্ছেন ৪ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা। রয়েছে ৫ বছরের আফটার সেলস সার্ভিসের সুবিধা। আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেমের আওতায় সারা দেশে ৭০টিরও বেশি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে গ্রাহকদের দোরগোঁড়ায় দ্রুত বিক্রয়োত্তর পৌঁছে দিচ্ছে মার্সেল। এজন্য রয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান।