অগ্রিম করের আওতা কমালো এনবিআর
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৯-০৬-২১ ১০:০৫:১৯
সরকারি কিছু সংস্থা এবং দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আপত্তির মুখে বাজেট প্রস্তাব পেশের সাত দিনের মাথায় গতকাল জরুরিভিত্তিতে অগ্রিম করের আওতা কমাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বাজেট পেশের পরদিন ১৪ জুন থেকে যন্ত্রপাতি, সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, জাতিসংঘভুক্ত সংস্থা, দূতাবাসের আমদানিকৃত পণ্য, বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির, রাষ্ট্রপতির আমদানিকৃত পণ্য, ত্রাণ, অন্ধ ও বধিরের জন্য পণ্য, সরকারি প্রকল্পে ব্যবহৃত পণ্য, তুলা, সরকার অনুমোদিত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে অগ্রিম কর প্রদান করতে হলেও আজ (শুক্রবার) থেকে আর দিতে হবে না। তবে কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর বাতিল করা হয়নি। ব্যবসায়ীরা এটা বাতিলেরও জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
অগ্রিম করের আওতা কমানোর পাশাপাশি করপোরেট করহার কমানো, করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো, রাজস্ব আদায়ে কঠোরতা কমানো, ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্যের তালিকা ও ভ্যাটের কোন হারে কোন পণ্য তা স্পষ্ট করা, রাজস্ব মামলায় আপিলের ফি কমানোসহ আরো বেশ কিছু বিষয় সংশোধনেও এরই মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা থেকে এনবিআরে আবেদন জানানো হয়েছে। এনবিআর সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রস্তাবিত বাজেটের যেসব প্রস্তাব সংশোধনে দাবি উঠেছে তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এত দিন বাণিজ্যিকভাবে আমদানিকৃত ছয় হাজার ৫৬২টি পণ্যে অগ্রিম বাণিজ্যিক ভ্যাট আরোপ ছিল। উৎপাদনকাজে নিয়োজিতরা এ ক্ষেত্রে ছাড় পেতেন। উৎপাদনকাজে নিয়োজিতদের শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ও শূন্য শুল্ক ধার্যকৃত কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর দেওয়ার প্রয়োজন হতো না। প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালসহ সব ধরনের আমদানি পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর আরোপ করা হয়। এত দিন উৎপাদনকারীরা নিম্নহারে ১ শতাংশ শুল্ক দিয়ে ৬৫৯ ধরনের যন্ত্রপাতি আমদানির সুযোগ পেয়েছেন। ৫ শতাংশ অগ্রিম কর আরোপের বিধান কার্যকর হলে ১ শতাংশ শুল্ক কর যোগ হয়ে ৬ শতাংশ পরিশোধ করে যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি করতে হবে।
জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল অগ্রিম করের আওতা কমিয়ে এনবিআরে ভ্যাটনীতি শাখার প্রথম সচিব তারেক রিকাবদার স্বাক্ষরিত বিশেষ আদেশ জারি করা হয়। এ আদেশে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত অর্থবিলের দফা ৭১ অনুযায়ী আগাম কর আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ কিছু কিছু খাতে আগাম কর পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় আমদানি পণ্য ছাড়করণে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। তাই ক্রান্তিকালীন অর্থাৎ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত উৎপাদনকারীদের নয়, শুধু বাণিজ্যিকভিত্তিক আমদানিকারক ৫ শতাংশ হারে আগাম কর পরিশোধ করবেন।
এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে চূড়ান্ত করার সময় এ আদেশ চূড়ান্ত বাজেটে সংযুক্ত করা হবে। যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।’