তিউনিসিয়া থেকে ১৭ বাংলাদেশি ফিরবেন আজ
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-২১ ১২:৩৮:০৩
গত তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে ভেসে থাকা ৬৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরে আসতে রাজি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ জন আজ বিকেল সোয়া পাঁচটায় কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে তিউনিসিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছাবেন।
ভূমধ্যসাগর দিয়ে এভাবে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা বাংলাদেশের ভাবমুর্তিকে সংকটে ফেলছে জানিয়েছেন বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান। তিনি বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি এই ১৭ জনের মধ্যে আটজনই মাদারপুরের। বাকি নয়জনের মধ্যে চারজন চারজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। বাকি পাঁচজনের বাড়ি শরীয়তপুর, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলার। এই ধরনের মানবপাচার যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে।
রেডক্রিসেন্ট সূত্র ধরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিসিয়ার সাগরে একটি নৌকায় ভাসছিলেন ৭৫ জন শরণার্থী, যাদের মধ্যে ৬৪ জনই বাংলাদেশি। নৌকাটি তিউনিয়ার উপকূলের কাছে পৌঁছালেও কর্তৃপক্ষ তীরে নামার অনুমতি দেয়নি।
তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে আর জায়গা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগরে ভাসতে থাকে। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে যান।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষক এমন নিশচয়তা প্রদানের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ১৮ জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনোক্রমেই তাদেরকে জারজিস বা মেডেনিনে থাকার অনুমতি প্রদান করেনি। এ অবস্থায় উদ্ধারকৃত বাংলাদেশীদের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তিউনিসে এনে রেড ক্রিসেন্ট ও আইওএম এর যৌথভাবে পরিচালিত শেল্টার হাউজে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে পাঠানো হচ্ছে।
এর মধ্যে প্রথম দফায় ২০ জনকে টিকিট দিলেও তিনজন আসতে রাজি হননি। বাকি ১৭ জন আজ বিকেলে ঢাকায় কাতার এয়ারওয়েজের কিউআর-৬৩৪ ফ্লাইটযোগে আসছেন।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, তিনজন দেশে আসতে রাজি না হওয়ার বিষয়টি নতুন দুশ্চিন্তার কারণ। একইভাবে শেল্টার হাউজে অবস্থানরত আরো কিছু বাংলাদেশী এই মুহুর্তে দেশে যেতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। বিষয়টি অত্যন্ত চিন্তার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। কেননা তাদের সকলকে দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর পরই তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের নিকট নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। দূতাবাসের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, কাপড়চোপড় এবং তিউনিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও তাদের সকলের আত্মীয়স্বজনের সাথে দেশে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত সবাই দেশে ফিরে না গেলে পরবর্তীতে এই রকম দুর্ঘটনায় তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।