সাভার থেকে শিগগিরই বিশুদ্ধ পানি আসছে মিরপুরে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৬-২৬ ১৬:৪৬:০৭


মিরপুর এলাকাবাসীর পানির ঘাটতি মেটাতে এবং বিশুদ্ধ পানি পানের সুযোগ দিতে বেশ আগেই প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। প্রকল্পটি ছিল- সাভারের ভাকুর্তায় গভীর নলকূপ বসিয়ে সেখান থেকে ৪৮ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে মিরপুরে পানি আনা। বেশ আগেই এটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তবে আশার কথা হলো- ইতিমধ্যেই এ প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

তবে সময়মতো শুরু করতে না পারায় এ প্রকল্পের একটি অংশের ব্যয় ২১ কোটি ১২ লাখ বেড়েছে। সাভারের ভাকুর্তায় গভীর নলকূপ নিমার্ণের প্রথম পর্ব শীর্ষক প্রকল্পের জন্য কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান হোন্ডো রোটেন কোম্পানির সঙ্গে সরকারের চুক্তিতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৯২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। তবে এখন এই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৪ কোটি টাকা।

এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সাভারের ভাকুর্তায় গভীর নলকূপ নিমার্ণের প্রথম পর্ব শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় ২১ কোটি ১২ লাখ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৪ কোটি টাকা। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে কমিটি।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয় বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। এ বিষয়ে বলা হয়, প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। খুব শিগগির এটি উদ্বোধন করা হবে বলেও বৈঠকে প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালে শুরু করে দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার কথা ছিল। তখন টোটাল প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থ জোগানদাতার অভাব, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ইত্যাদি কারণে কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ফলে জায়গার দাম, গভীর নলকূপের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, পাইপ ইত্যাদির দামও বেড়ে মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭৩ কোটি টাকা।

এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মিরপুরে সরবরাহ করা পানির সঙ্গে ভাকুর্তার এই পানি যুক্ত করা সম্ভব হবে। এতে পানির সমস্যা কমে যাবে। এই প্রকল্প থেকে দিনে প্রায় ১৫ কোটি লিটার পানি পাওয়া যাবে।

সূত্র আরও জানায়, রাজধানীর পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ স্থাপন বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। আর মিরপুরে পানির স্তর নেমে যাওয়ার প্রবণতা অন্য এলাকার তুলনায় বেশি। সে কারণেই ভাকুর্তায় গভীর নলকূপ বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহত্তর মিরপুরের ১০০টির মতো গভীর নলকূপের বেশ কয়েকটির উত্তোলন ক্ষমতা কমে গেছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, বছরে সেখানে কমপক্ষে তিন মিটার করে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে।

প্রকল্প সূত্র মতে, সে জন্যই বাইরে থেকে পানি আনা হচ্ছে। খুব প্রয়োজন না হলে মিরপুরে আর গভীর নলকূপ বসানো হবে না। ভাকুর্তায় যে এলাকা থেকে পানি তোলা হবে, সেখানে ১৫ বছরেও পানির স্তর মোটামুটি ঠিক থাকবে। তবে সব নলকূপ সার্বক্ষণিকভাবে চালু রাখা হবে না।

ভাকুর্তায় ১৯ একর জায়গা নিয়ে ৪৬টি গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে। তবে জায়গাটি একসঙ্গে নয়, বিচ্ছিন্ন। এ পর্যন্ত সাতটি নলকূপ বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। শেষের পথে আরও ছয়টি। বাকিগুলোর কাজ চলছে। ৪৮ কিলোমিটার পাইপলাইনের মধ্যে ২৫ কিলোমিটার টানা সম্ভব হয়েছে।