আমি অনিয়ম করলে আমাকেও নিয়ে লিখুন : গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৬-২৬ ১৮:৫০:৩৩
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এমপি বলেছেন, ‘অনিয়ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করুন এবং আমি অনিয়ম করলে আমাকে নিয়েও লিখুন ।
আজ বুধবার(২৬জুন) সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এর সেমিনার কক্ষে পিরোজপুর জেলার সাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিকতায় বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রশিক্ষণার্থী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, দায়িত্ব চিরস্থায়ী। সকলের জন্য কাজ করা হচ্ছে দায়িত্ববোধ। সততা, দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা আমার কর্তব্য। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে আমি বিশ্বাস করি। আমি এক পয়সা ঘুষ খাব না, কমিশন নেব না, অনিয়মে সম্পৃক্ত হবো না, কোনো অনিয়মকে আমি সমর্থন করবো না’।
মন্ত্রী বলেন, কে রক্তচক্ষু দেখালো, হুমকি দিলো, সেটা বিষয় নয়। সরকারের কেবিনেট মন্ত্রী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে আছি। আমার আত্মীয় স্বজন বা আমার অন্যায়ের বিরুদ্ধে হলেও নিউজ করতে আমি আপনাদেরকে উৎসাহিত করছি। তবে কারো দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যেনো সংবাদ পরিবেশন না হয়। সে সংবাদে সরকারি দল বা বিরোধী দলের নেতা, যেই হোক তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। গভীরে গিয়ে তথ্য অনুসন্ধান করে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে।’।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন সংবাদ পরিবেশন করা সাংবাদিকের অধিকার, কৃপা নয়। তথ্যের অবাধ প্রবাহে শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন। একারণে তিনি তথ্য অধিকার আইন করেছেন, যাতে যেকোন মানুষ তথ্য পেতে পারে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সংবাদমাধ্যমকে এত বেশী প্রসারিত করা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে এত বেশী লাইসেন্স দেয়া, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়াকে এত বেশী কাজ করার সুযোগ দেয়া, শেখ হাসিনার বাইরে আর কেউ কোন দিন দেয়নি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিলো পিআইবিকে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা, সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিত করা’।
মন্ত্রী বলিন, সংবাদ এ সমাজ ব্যবস্থাকে সভ্য করার জন্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ইভটিজিং মুক্ত করার জন্য, মানবাধিকার ও সভ্যতাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য’ বলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নাগরিক দায়িত্বের বাইরে গিয়ে একটা বড় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন। সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। নানা রকম প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে আপনাদেরকে কাজ করতে হয়। মফস্বলের সংবাদাতাগণের কাছে সাংবাদিকতা পেশার চেয়ে নেশা হয়ে যায়। এটাকে আমি পবিত্রতার সঙ্গে দেখি। সমাজব্যবস্থায় সাংবাদিকদের উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব আছে। আপনারা সেটা পালন করে চলেছেন। তবে শেখার শেষ নেই, অর্জনেরও শেষ নেই। সে জায়গা থেকে আপনারা বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন’।
মন্ত্রী তার বক্তব্যে আরো যোগ করেন, ‘সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিক মিডিয়া একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। অনলাইন পোর্টাল এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়। মোবাইলে বসে সকল নিউজ এখন পাওয়া যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াও এখন সংবাদ মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। এরকম একটি ব্যপ্তির জায়গায় আজ সংবাদ মাধ্যম চলছে’।
প্রশিক্ষণার্থী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘একটি সংবাদ একজনের জীবন বিপন্ন করে দিতে পারে, সামাজিকভাবে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারে। আবার আপনারা সমঝোতা করলে দুর্নীতিগ্রস্থ লোক বেঁচে যেতে পারে। এ সমঝোতা করার জায়গায় আমি একমত নই। এ জন্য দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার পরীক্ষা করে, অনুসন্ধান করে সংবাদ পরিবেশন করবেন। আপনাদের প্রশিক্ষণ যত বেশী হবে তত আপনারা সমৃদ্ধ হবেন। আর সেই প্রশিক্ষণ আধুনিক, সমৃদ্ধ, উন্নত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে। সাংবাদিকদের যেকোন প্রয়োজনে আমিসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পাশে থাকবো।
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ও পিআইবি’র পরিচালনা বোর্ডের সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ।
সানবিডি/ এমএফইউ