মার্কিন ধনীরা আরও ধনী, গরিবরা নিঃস্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৭-০৩ ১০:১১:৪১


অর্থনৈতিক মন্দার সময় পেরিয়ে একটানা দশ বছর ধরে বিস্তার ঘটে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। কিন্তু এতে শুধু লাভ হয়েছে ধনীদের। বলতে গেলে ফুলে-ফেঁপে ওঠা অর্থনীতিতে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে ধনীরা। পয়সাওয়ালাদের পয়সা আরও বেড়েছে।
এ সময়জুড়ে ধনীদের সম্পদ যে হারে পাহাড় ছুঁয়েছে নিুবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের সম্পদ সে তুলনায় তেমন বাড়েনি। অর্থ-সম্পদ কমতে কমতে অনেকেই একেবারে নিঃস্ব হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এখন লাখ লাখ মানুষ সর্বহারা হয়ে রাস্তায় জীবন কাটাচ্ছে।

সম্পদ ও আয়ের এ প্রকট বৈষম্য রাজনীতিতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। রাজনীতিকরা এখন আর গরিবের কথা চিন্তা করছেন না। তারা ধনীদের সুযোগ-সুবিধাই দেখছেন। ফলে খুব শিগগিরই দেশটির অর্থনীতি আরেকটি সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে তার সবরকম লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মার্কিন অর্থনীতির এই ভয়াবহ দিক উঠে এসেছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে ধনীর সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান মতে, ২০০৮ সালে মার্কিন বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ছিল ২৬৭। গত কয়েক বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০৭ জনে। ইউবিএসের প্রাইভেট ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড আল্ট্রা হাই নেট ওর্থের প্রধান জন ম্যাথিউস বলছেন, ‘ধনীরা আরও ধনী হয়েছে।

আর সেটা দ্রুতগতিতে। সেইসঙ্গে ভোগের প্রবণতার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে।’ ধনীরা আরও ধনী হলেও স্বল্প আয়ের মানুষকে প্রতিনিয়ত সংগ্রামের মাধ্যমে টিকে থাকতে হচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কুলিয়ে উঠতে পারছে না তারা। একজন একাধিক চাকরি করেও হিমশিম খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পাঁচ ধনী এখন দেশটির মোট সম্পদের ৮৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করেন। অর্থনৈতিক মন্দার আগে থেকেই সম্পদের বেশিরভাগই অল্পকিছু মানুষের হাতে কুক্ষিগত হওয়ার এ প্রবণতা বাড়ছিল বলে ২০১৬ সালে প্রকাশিত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের তথ্যে দেখা গেছে। আবার একই সময়ে সরকারি ত্রাণ সহায়তা গ্রহণকারী বা হাত পাতা মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৯০ লাখে, যা ২০১৩ সালের তুলনায় কম হলেও ২০০৮ সালের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি।