বিনিয়োগের চেয়ে অর্থপাচার বাড়ছে বিত্তশালীদের

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-০৭-০৭ ১৫:৪৩:১৫


বিনিয়োগের চেয়ে পাচার অনেক সহজলভ্য ও লাভজনক হওয়ার কারনে অর্থপাচার বাড়ছে বিত্তশালীদের। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচারের তথ্য রয়েছে সরকারের কাছে। বিএফআইইউ এবং অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ওই সব দেশে সেকেন্ড হোম করার জন্য ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনা ছাড়াও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং ব্যাংক হিসাবও পরিচালনা করা হচ্ছে পাচারের অর্থে।

গত বছরের সুইস ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, বাংলাদেশিরা পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ রেখেছে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে। যা সরকারের জন্য বাড়তি চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।এ উদ্বেগ আরো বেড়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) একটি প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে। এপিজির পরিচালক ডেভিড শ্যানন ও মোস্তফা আকবর আজ এবং আগামীকাল সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অর্থপাচারের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে বৈঠকে বসবে। প্রতিনিধিদলটির মূল্যায়ন প্রতিবেদনের ওপরই বাংলাদেশ মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাসে অর্থায়ন এবং অর্থপাচার কোন তালিকায় থাকবে তা নির্ভর করছে।

গোপন সূত্র মতে, দেশের ভেতরে বেসরকারি বিনিয়োগ একই বৃত্তে আটকে আছে অনেক বছর। এর মধ্যে আবার ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে বাড়ছে অর্থপাচারের ঘটনা। এ বিষয়ে এপিজির প্রতিনিধিদলটি সরকারকে বেশ কিছু প্রশ্ন করতে পারে। বিশেষ করে সরকারের পদক্ষেপ এবং অর্থপাচার রোধের পরিকল্পনা জানতে চাইবে সংস্থাটি। এ ছাড়া ২০১৫-১৬ সালে বাংলাদেশের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়েও প্রশ্ন রাখবে প্রতিনিধিদলটি। আগামী বছর এপিজির বৈঠকে এ রিপোর্ট তুলে ধরা হবে। এরপর বাংলাদেশের অবস্থান জানা যাবে।

প্রতিনিধিদলটির মূল্যায়ন ভালো করতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আজ অনুষ্ঠেয় মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠকে একটি কৌশলপত্র তুলে ধরা হবে। এতে আগামী কয়েক বছরের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বৈঠকে যে কৌশলপত্র উপস্থাপন করা হবে তাতে দেখা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের নিয়ে কাজ করবে। হুন্ডি কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে সহজেই যাতে অর্থপাচার করা না যায় সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষত বিএফআইইউ কাজ করবে। বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িঘর ও ব্যাংক ব্যালান্স বা দ্বৈত নাগরিকদের আয় দেখার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দায়িত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া বৈঠকে এসব ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও সমস্যা সমাধানে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, জাতীয় সমন্বয় কমিটির সঙ্গে ছাড়াও প্রতিনিধিদলটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে।

সানবিডি/ এমএফইউ