খুলনায় জোড়া খুনের মামলার রায়ে ৫জনের ফাঁসি

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-০৭-১৬ ১৫:৪৪:৩৬


খুলনায় এক্সিম ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষনের পর তার বাবা ইলিয়াছ আলীসহ হত্যাকান্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।

মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩নং ট্রাইব্যুনালের বিচারক  মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা  করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তার জন্য ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষে অ্যাডভোকেট কাজী সাব্বির আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন, অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- খুলনা নগরীর লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা রোডের বাসিন্দা শেখ আব্দুল জলিলের ছেলে সাইফুল ইসলাম পিটিল (৩০), তার ভাই মো. শরিফুল (২৭), মো. আবুল কালামের ছেলে মো. লিটন (২৮), অহিদুল ইসলামের ছেলে আবু সাইদ (২৫) ও মৃত সেকেন্দারের ছেলে মো. আজিজুর রহমান পলাশ (২৬)। এদের মধ্যে হত্যাকান্ডের পর থেকেই আসামি শরিফুল পলাতক রয়েছে।

আদালত সুত্রে জানা গেছে, হত্যাকান্ডের মামলায় ২২জন ও গণধর্ষনের মামলায় ২৮জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন করেছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে পৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ধারায় ২জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের বর্ননা রয়েছে। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩নং ট্রাইব্যুনালে মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শুরু হয়।

মামলার তদন্ত চলাকালে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫জনের মধ্যে ৪জন গ্রেফতার হয়। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয় পিটিলের স্ত্রী আসমা খাতুন, নোয়াব আলি গাজী ও আসলাম মিস্ত্রি নামের একজন সন্দেহভাজনকে। তাদের মধ্যে লিটন ও সাঈদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে উঠে আসে লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের ঘটনা। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দীতে বলে, ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন অফিসে আসা-যাওয়ার পথে আসামিরা কু-প্রস্তাবসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করতো। এর প্রতিবাদ করায় ঘটনার দিন রাতে বাড়ির দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করে ৫ আসামি। এরপর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পারভীনের বাবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পাশের রুমে থাকা পারভীনকে ৫জন মিলে গণধর্ষণের পর হত্যা করে সেফটি ট্যাংকির মধ্যে বাবা ও মেয়ের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে ঘরে লুটতরাজ চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী থেকে জানা গেছে, কর্মস্থলে যাওয়া-আসার পথে এক্সিম ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে উত্যক্ত করতো এলাকার কয়েকজন বখাটে সন্ত্রাসী। তাদের উত্যক্তের প্রতিবাদের কারনে ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষন ও তার পিতা ইলিয়াস চৌধুরীকেসহ হত্যা করা হয়। নগরীর লবণচরা থানাধিন বুরো মৌলভীর দরগা এলাকার ৩নং গলির ঢাকাইয়া হাউজ এ.পি ভিলা নামের বাড়িতে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নৃশংস এ খুনের ঘটনা ঘটে।  বাবা- ও মেয়েকে হত্যার পর বাড়ির ভিতরে সেফটি ট্যাংকির মধ্যে লাশ ফেলে দেয় খুনিরা। পরে তারা ওই ঘরের টাকা পয়সা ও স্বর্নালঙ্কার লুটে পালিয়ে যায়।

এঘটনায় লবনচরা থানায় পারভীন সুলতানার ভাই রেজাউল আলম চৌধুরী বিপ্লব বাদি হয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন নং-০৩। পারভীন সুলতানাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে ২২ সেপ্টেম্বর আরও মামলা দায়ের হয় নং-০৫। ২০১৬ সালের ৯মে হত্যাকান্ডের ও একই বছরের ২৪মার্চ গনধর্ষনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা এস আই কাজী বাবুল ওই ৫জনকে অভিযুক্ত করে খুলনা’র মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সান বিডি/এসকেএস