মোটরসাইকেল চালানোর সময় খেয়াল রাখবেন যে ১৩ টি বিষয়

আপডেট: ২০১৫-১১-১৮ ১০:২০:২১


Indonesia-Protest-Ride-2010-02ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালানো ( Motorcycle Riding in High Traffic) প্রত্যেক বাংলাদেশী বাইক  চালকের কাছে একটি সাধারন ব্যাপার । লোকজন তাদের নিজেদের আরাম ও নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন নিয়মনীতি মেনে চলে। প্রত্যেক দেশেরই নিজস্ব কিছু নিয়মনীতি রয়েছে । কিন্তু প্রত্যেক দেশেই যানজট একটি সাধারন ব্যাপার । যখন একজন বাইক চালক ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালায় তখন তার অবশ্যই কিছু নিয়মনীতি মেনে চলা উচিত । কোন দেশ বা নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্য যানবাহন চলাচলের নিয়মের কোন পরিবর্তন হয় না। যান চলাচলের জন্য কিছু নিয়মনীতি রয়েছে এবং প্রত্যেক মানুষেরই এগুলো মেনে চলা উচিত । তাই যখন আপনি বাইক চালাবেন,আপনাকে ১৩ টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যা আপনাকে বিপদ হতে রক্ষা করবে ।

ব্যস্ত রাস্তায় মোটরসাইকেল চালানোর সময় যে ১৩ টি বিষয় খেয়াল রাখতে হবেঃ  

১.যখন আপনি বাইক চালাবেন তখন অন্য গাড়ির চালকদের উপর খেয়াল রাখুন । কারণ ডানে বা বামে মোড় নেয়ার সময় চালককে অবশ্যই আয়নায় তাকাতে হবে এবং ডানে বা বামে তাদের বাতি জ্বালাতে হবে । তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন সে কোন দিকে যাবে ।

২.প্রত্যেক বাইকেই আয়না থাকে এবং আয়নাগুলো চালকের জীবনের রক্ষক হিসেবে কাজ করে । কিন্তু এগুলো সবসময় সঠিক নির্দেশনা দেয় না । যখন আপনি ব্যস্ত রাস্তায় বাইক চালাবেন তখন আয়নাটিকে ঘাড়ের সাপেক্ষে এমনভাবে স্থাপন করবেন যেন পিছনে দেখতে কোন সমস্যা না হয় । আপনার এটা নিয়মিত করা উচিত কারণ এটা যদি যথাযথভাবে স্থাপন করা না হয় তাহলে একটি জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম হয়েও এটি আপনাকে দুর্ঘটনায় ফেলতে পারে ।

৩. ট্রাফিক পুলিশ থামার নির্দেশ দিলে কখনো তাড়াহুড়া করবেন না । কারণ অধিকাংশ মানুষ শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়া করে কারণ তারা তাদের সময় যানজটে কাটাতে চায় না । কিন্তু ঐ লোকেরা নিজেদেরকে মৃত্যুর খুব কাছে নিয়ে যায় । শুধু একটি নিয়মই মনে রাখুন কখনো নিজেকে দুটি গাড়ির মাঝে রাখবেন না ।

৪.যখন আপনি ব্যস্ত রাস্তায় চালাবেন তখন বিভিন্ন ঘটনা ও পরিস্থিতির সাথে আপনাকে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে । তাই দ্রুত তাল মিলাতে হলে আপনাকে ব্রেক লিভারের উপর আঙুল রাখতে হবে এবং ডান পায়ের আঙুল পিছনের ব্রেক প্যাডেলের উপর রাখতে হবে ।

৫.যখন আপনি দেখবেন যে যানবাহন হঠাৎ খুব ধীরে চলতে শুরু করেছে তখন আপনি আপনার সামনের গাড়ির ডানে বা বামে থাকতে চেষ্টা করুন । ফলে আপনার অন্যদিক দিয়ে যাওয়ার একটি পথ খোলা থাকবে। যখন থামবেন তখন আপনাকে আবার চলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে এবং আয়নায় চোখ রাখতে হবে ।

৬. যখন আপনি চালাবেন আপনার প্রত্যেকটি নড়াচড়ায় খেয়াল করুন মানে আমি বোঝাচ্ছি যে আপনার চারপাশে যা ঘটছে তা ভালভাবে খেয়াল করুন। এটা আপনাকে পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করবে এবং আপনি যথা সময়ে এগিয়ে যেতে পারবেন ।

৭. যখন সামনের দিক হতে আসা একটি গাড়ি হঠাৎ থেমে বামে মোড় নেয় তখন আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে যেন ঐ গাড়ির চালক আপনাকে দেখতে পায় এবং সে অবহেলা না করে । এটা আপনাকে দুর্ঘটনা হতে রক্ষা করবে । আপনি অন্য গাড়ির চাকা বা স্টিয়ারিং এর উপর নজর রাখুন এবং এমন কিছু যদি আপনি দেখতে পান যে এই মুহূর্তে গাড়িটি নড়াচড়া করবে তাহলে ব্রেক বা গতিবৃদ্ধির জন্য তৈরী হন।

৮. আপনার চোখ ও নাক সবসময় খোলা রাখা উচিত যাতে দেখতে ও শ্বাস নিতে পারেন । আপনার তেল চুইয়ে পরছে কিনা বা জ্বালানীর দিকে লক্ষ রাখা উচিত । সাথে সাথে আপনাকে রাস্তার পাথর ও বালির দিকেও নজর দিতে হবে । নাকের সাহায্যে আপনি চুইয়ে পরা জ্বালানির গন্ধ পাবেন ।

৯.সবসময় যানজটমুক্ত রাস্তায় চলতে চেষ্টা করুন । যখন সব ধরনের যানবাহন থেমে যায় তখন তাদের মধ্যে কিছু ফাঁকা জায়গা থাকে আপনার অবশ্যই ঐ ফাঁকা জায়গাগুলোর মধ্যদিয়ে চালানোর চেষ্টা করা উচিত । এটা আপনাকে নিরাপদ রাখবে । আপনি অবশ্যই দ্রুত চালাবেন না কারণ এটা আপনাকে দেখতে সমস্যা সৃষ্টি করবে ।

১০. একটি মিট মিট করা সিগন্যাল চালকদের দিক পরিবর্তনের নির্দেশ দেয় । এর মাধ্যমে  আপনি জানতে পারেন আপনার সামনের গাড়িটি কোনদিকে যাবে। তাই ব্যস্ত রাস্তায় আপনিও সুইসটি কিছুক্ষন পর পর জ্বালান ।

১১. মোটরসাইকেলের একটি বড় সুবিধা হল এটা চিকন । তাই যানজটে এটা সহজেই বামে বা ডানে যেতে পারে এবং তার সামনে কি আছে তা সহজেই দেখতে পারে । তাই যানজটে এটা গাড়ির চেয়ে ভাল ।

১২.মোটরসাইকেল হালকা,চিকন ও অনেক বেশী পৌরষিক। তাই খারাপ পরিস্থিতিতে হঠাৎ ব্রেক করবেন না নইলে আপনি পড়ে যেতে পারেন । আপনার সবসময় একটি বিকল্প পরিকল্পনা মাথায় রাখা উচিত।

১৩.দূরের চালকেরা যাতে আপনাকে দেখতে পায় সে ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত হন। এটা আপনাকে অযথা ব্রেক করার হাত থেকে রক্ষা করবে ।

এ কথা বলাই যায়, যখন আপনি ব্যস্ত রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাবেন তখন যদি এই নিয়মগুলো মেনে চলেন এগুলো আপনাকে নিরাপদ রাখবে । সবচেয়ে ভয়াবহ যানজট হয় বাংলাদেশ ও ভারতে । তাই আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে এবং এই নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে কারণ এগুলো আপনাকে নিরাপদ রাখবে ।