বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হবে: আইনমন্ত্রী

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-১০ ১৮:২৪:১১


আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির সব ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, এ নৃশংস হত্যায় যে জড়িত থাকুক না কেন এবং তাদের পরিচয় যা হোক না কেন সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শেষ করা হবে।

তিনি বৃহস্পতিবার নোয়াখালীতে ৬০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দশতলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব বলেন।

তিনি বলেন, সরকার এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য দ্রুত গতিতে তদন্তের ব্যবস্থা করেছে।

তিনি বলেন, মানুষ যাতে বিচারের জন্য পথে পথে না ঘোরে। মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়। ন্যায়বিচার যেন শুধু মুখের বুলি না হয়। ন্যায়বিচার যেন কাগজে দেখা যায়। সে ব্যবস্থা সরকার করছে।

মন্ত্রী বলেন, সরকার চায় মানুষ দ্রুত বিচার পাক এবং বিচার না হওয়ার কারণে স্ট্রিট জাস্টিসের জন্ম না হোক।

অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালত অঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দেশের সব আদালতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে এবং সেগুলো নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।

আনিসুল হক বলেন, উচ্চ আদালতের একটি রায় অনুযায়ী দেশের নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা হয়ে বিচার বিভাগের পৃথকভাবে পথচলা শুরু হয় ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর।

চলার শুরুতে আদালতে, বিশেষ করে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসিতে এজলাসের ব্যাপক অপ্রতুলতাসহ বিচারক সংকট দেখা দেয়। এতে করে বিচারক, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণ যেমন ভোগান্তির শিকার হতে থাকেন, তেমনি মামলার জটদিনের পর দিন বাড়তে থাকে।

এমন অবস্থায় ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও পৃথকীকরণকে সুদৃঢ়, টেকসই করার জনবাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। প্রথমে এজলাস সংকট দূরীকরণের জন্য আদালত ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পাশাপাশি নতুন বিচারক নিয়োগের কার্যক্রম জোরদার হয়।

তিনি বলেন, বিগত সাড়ে ১০ বছরে নতুন করে এক হাজার ২৮ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়ার পরও অধস্তন আদালতের এজলাস সংকট প্রায় পুরোটাই দূর করা সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীতে যে আদালত ভবন উদ্বোধন করা হলো তা আসলে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের একটি খণ্ডচিত্র মাত্র। বর্তমানে বাংলাদেশের এমন কোনো সেক্টর খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে তার সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

তিনি বলেন, আমরা যদি বিচার বিভাগের কথাই বলি, তাহলে দেখা যাবে ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল এবং জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে বিচার বিভাগের যে উন্নয়ন হয়েছে তার সবগুলো যোগ করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়কালের উন্নয়নের সমান হবে না।

মন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন যে, উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও এই প্রক্রিয়া কিন্তু এমনিতেই চলে না, একে চালাতে হয়। একে ভালোভাবে চালাতে হলে অবশ্যই দক্ষ চালকের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ চালকের আসনে থাকার কারণে বিচার বিভাগের এ অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। কেবল সিজেএম আদালত ভবন নির্মাণের জন্যই বর্তমান সরকার ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং এ প্রকল্পের প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় জেলায় সিজেএম আদালত ভবন উদ্বোধনও করা হলো। এ ছাড়া সরকার পূর্বের জেলা জজ আদালত ভবনগুলো উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নসহ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। ফলে বিচার বিভাগের এজলাস সংকট তথা অবকাঠামোগত সমস্যা প্রায় দূর হয়েছে।

নোয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় নোয়াখালী ৪ ও ৬ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী ও আয়েশা ফেরদাউস, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ফরিদা খানম, আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

সানবিডি/ঢাকা/এসআই