রাবিতে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-১৩ ১৯:৫৬:২৮
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ‘সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। একই স্থানে দুপুর ১২ টায় রাবি উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগসহ আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে জড়িতদের সাজা প্রদানের দাবি জানিয়ে সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবর খোলা চিঠি পেশ করা হয়। সেখানে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো, আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত ও বিভিন্ন সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী হত্যা ও নির্যাতনের বিচার দাবি, দুর্নীতিগ্রস্থ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য অপসারণ ও সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা, সন্ত্রাস, দখলদারীমুক্ত গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিতে অবিলম্বে রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, হলে সিট বাণিজ্য, রাজনৈতিক বøক ও ছাত্র নির্যাতন বন্ধ, প্রথম বর্ষ থেকে
প্রশাসনের তত্ত¡াবধানে সকল শিক্ষার্থীদের জন্য সিটের ব্যবস্থা, গবেষণা খাতে বিশ্ববিদ্যালয় বাজেটের পর্যাপ্ত বরাদ্দসহ মেধার মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিতে ৭৩ এর অধ্যাদেশ যুগোপযোগীকরণ এবং ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত অসম চুক্তিসমূহ বাতিল করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিদম শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মহব্বত হোসেন মিলন, রঞ্জু হাসান, শাকিল আহমেদ, মো. ইসরাফিল প্রমুখ।
এদিকে ভিন্ন কর্মসূচিতে দুপুর ১২টার সমাবেশে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ মোন্নাফ বলেন, আবরার হত্যা নিছক একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একটি চুক্তি ভারতের সঙ্গে হওয়ায় সে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিল। যাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা রাতভর তাকে নির্যাতন করে অবশেষে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে হলের সিঁড়িতে ফেলে রেখেছিল। বাংলাদেশে তনু হত্যার বিচার হারিয়ে গেছে, সাগর-রুনি হত্যার বিচার পায় নি জাতি, বিশ্বজিত হত্যার বিচারের নামে তালবাহানা দেখেছে বিশ্ব।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতে যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে, কোন হত্যাকাণ্ডেরর বিচার হয় নি। তাই আমরা চাই আবরার হত্যার বিচার নিয়ে শুধুমাত্র গ্রেফতার নয়, অনতিবিলম্বে দ্রুত বিচার আইনে আবরার হত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় এনে তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হোক। সেই সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান যে দুর্নীতি অব্যাহত রয়েছে, উপ-উপাচার্যের ফোনালাপ ফাঁস হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে সারা বিশ্বের সামনে নষ্ট করেছে। এর দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রশাসন এড়িয়ে যেতে পারে না। সুতরাং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহবান জানাই যেন তারা নৈতিক অবস্থান থেকে দূরে সরে যাওয়ায় পদ থেকে সরে যান।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে আইন বিভাগের এক চাকরি প্রত্যাশীর স্ত্রীর দর কষাকষির ফোনালাপ ফাঁস হয়। এতে উপ-উপাচার্যের জামাতা ও এক আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে নিয়োগ পেলেও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত নুরুল হুদা নামের ওই চাকরি প্রত্যাশীর নিয়োগ হয়নি। এর আগে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের ‘জয় হিন্দ’
স্লোগান নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ অক্টোবর থেকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত এবং প্রশাসনের পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সানবিডি/ঢাকা/রাবি প্রতিনিধি/এসএস