সাভার চামড়া শিল্প নগরীর ১১ প্লটের বরাদ্দ বাতিল

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০১৯-১০-২৩ ১৬:৩০:০০


বিসিকের সাথে চুক্তি অনুযায়ী কারখানা নির্মাণসহ উৎপাদন কার্যক্রম শুরুতে ব্যর্থ হওয়ায় সাভার চামড়া শিল্পনগরির ১১টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। বাতিলকৃত প্লট মালিকদের অনুকূলে শিগ্গিরই চিঠি ইস্যু করা হবে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিল্প সচিব আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে সভায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বিশেষ অতিথি ছিলেন। সভায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও কর্পোরেশনের প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোট ৪৯টি উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প, ০৩টি কারিগরি এবং ০১টি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প রয়েছে। সব মিলিয়ে এসব প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবিখাতে ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্যখাতে ৫৬ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নখাতে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

সভায় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়। এ সময় চাষি পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত বিসিআইসি’র বাফার গুদাম নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়া হয়। গুণগতমান বজায় রেখে দ্রুত অবকাঠামো নির্মাণের স্বার্থে একই প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিক নির্মাণ চুক্তি পরিহারের নির্দেশনা দেয়া হয়। এছাড়া, প্রকল্প সম্পর্কিত সমস্যাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি, অর্থছাড়, দরপত্র আহবান, যথাসময়ে অধিগ্রহণের সুবিধার্থে ভূমির উপযুক্ত মূল্য নির্ধারণ, কেন্দ্রিয়ভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন তদারকি, সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের পিপিআর সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, প্রকল্প এলাকায় অবস্থান নিশ্চিতকরণসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় জানানো হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সাভার চামড়া শিল্পনগরির সিইটিপি নির্মাণ শেষ হবে। এ লক্ষ্যে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানও নিশ্চয়তা দিয়েছে মর্মে সভায় তথ্য প্রকাশ করা হয়। সভায় নভেম্বরের মধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য বিসিকের সকল দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়। একই সাথে আগামী অর্থবছরের জন্য যাবতীয় দরপত্র প্রক্রিয়া জুন, ২০২০ এর মধ্যে সম্পন্ন করার পরামর্শ দেয়া হয়।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে গতানুগতিক মানসিকতা পরিহার করে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্য চাকরিজীবীদের চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করছেন। এটি বিবেচনায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নে সবাইকে আরও উদ্যমী হতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়ন কোনো সমস্যা নয়। গুণগতমান বজায় রেখে স্বচ্ছতার সাথে অর্থ খরচ করলে সরকার প্রয়োজনে আরও অর্থ বরাদ্দ দেবে। সরকার কর্মচারিদের প্রতি পুলিশিং করতে চায় না উল্লেখ করে তিনি জাতির প্রতি দায়বোধ ও দেশপ্রেম থেকে অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পাদনের আহবান জানান।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, যে কোনো মূল্যে নির্ধারিত সময়ে গুণগতমান বজায় রেখে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করতে হবে। ছোট-খাট কারণ দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব করার প্রবণতা পরিহার করতে হবে। তিনি বিসিকসহ বিভিন্ন সংস্থার বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলো আকস্মিক পরিদর্শনের ব্যবস্থা করতে শিল্পসচিবকে পরামর্শ দেন। তিনি বিসিকের খালি প্লট প্রকৃত উদ্যোক্তাদের মাঝে দ্রুত বরাদ্দের পাশাপাশি বিসিআইসি’র বাফার গুদামগুলোর প্রকৃত মজুদ পরিস্থিতি নিরীক্ষা করার তাগিদ দেন। এক্ষেত্রে কোনো ধরণের হেরফের পাওয়া গেলে দায়িদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন।

সভায় শিল্পসচিব বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতি কথায় নয়, কাজে প্রমাণ করতে হবে। যেসব কর্মকর্তা কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পের বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে, তাদেরকে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিগত অর্থবছরে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। একই সাথে প্রকল্প বাস্তবায়নে সফল কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কৃত করা হবে। তিনি শেষ মুহুর্তের জন্য কাজ ফেলে না রেখে অর্থবছরের শুরু থেকেই পরিকল্পনামাফিক প্রকল্প কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সানবিডি/ঢাকা/এসআই