চার ধর্ষককে তাড়িয়ে নিজেই ধর্ষণ : সেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-২৮ ১২:৪০:৪৯
ভোলার মনপুরায় চার ধর্ষককে তাড়িয়ে দিয়ে নিজেই গৃহবধূকে ধর্ষণ করা সেই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সাকুচিয়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার নজরুল ইসলাম (৩০) মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মনপুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর থেকে আমরা ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ওই গৃহবধূকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্পিডবোটটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার বেলা ১টার দিকে ভোলার মনপুরা উপজেলার চর পিয়ালে এক বাগানের মধ্যে গণধর্ষণের এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সহায়তা করার অভিযোগে গতকাল রাতে মনপুরা থানায় মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ।
আসামিরা হলেন- মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং স্পিডবোটের মালিক নজরুল ইসলাম (৩০), মো. বেলাল পাটোয়ারী (৩৫), মো. রাশেদ পালোয়ান (২৫), মো. শাহীন খান (২২) ও মো. কিরন (২৬)। এ ছাড়া ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে মামলার আসামি হলেন স্পিডবোটের চালক মো. রিয়াজ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ তার আড়াই বছরের শিশুকে নিয়ে মনপুরা যাওয়ার জন্য চরফ্যাশন উপজেলার বেতুয়া লঞ্চঘাটে আসেন। তিনি ঘাটে এসে দেখেন, মনপুরাগামী লঞ্চটি ছেড়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে স্পিডবোটে চড়েন। বোটে আরও দুজন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। পথে জনতার খালপাড় এলাকা থেকে আরও দুজন পুরুষ যাত্রী ওঠেন।
বোটটি মনপুরার উদ্দেশে কিছুক্ষণ চলার একপর্যায়ে পুরুষ চার যাত্রী মিলে জোরপূর্বক স্পিডবোটটি চর পিয়াল এলাকায় থামান। এরপর গৃহবধূকে চরে নামিয়ে বাগানের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
বিষয়টি স্পিডবোটের চালক মো. রিয়াজ মালিক নজরুল ইসলামকে জানান। খবর পেয়ে তিনি অন্য একটি স্পিডবোটে করে চর পিয়ালে নামেন। ওই সময় নজরুল ইসলাম ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা চার যাত্রীকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। এরপর নজরুল নিজে ওই গৃহবধূকে আবার চরের ভেতরে ধর্ষণ করেন।
এ সময় নজরুল ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করেন এবং বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য গৃহবধূকে হুমকি দেন। এ ছাড়া কাউকে কিছু বললে ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এদিকে ধর্ষণের এ ঘটনা বাগানের রাখাল ও মহিষ মালিকেরা দেখে ফেলেন। পরে তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজলকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। এরপর চেয়ারম্যান সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চর পিয়াল থেকে ওই গৃহবধূকে স্পিডবোটে করে উদ্ধার করে মনপুরা থানায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।