কাসেম সোলেইমানির জানাজায় মানুষের ঢল

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০১-০৬ ১৫:৪৫:২৮


ইরানের নিহত সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির জানাজায় সোমবার রাজধানী তেহরানের রাস্তায় জনতার ঢল নেমেছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে শুক্রবার ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় হত্যা করা হয় সোলেইমানিকে। জানাজার নামাজের ইমামতি করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ খামেনি। এক পর্যায়ে তাকে কাঁদতে দেখা যায়।

সোলেইমানি হত্যার কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে ইরান এবং রবিবার তারা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে নিজের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

৬২ বছর বয়সি সোলেইমানি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের সামরিক অভিযানের প্রধান ছিলেন এবং যাকে যুক্তরাষ্ট্র একজন সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখতো।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সোলেইমানি মার্কিন কূটনীতিক এবং ইরাক ও ওই অঞ্চলের অন্য জায়গায় থাকা মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের উপর “আসন্ন এবং ভয়াবহ হামলার ষড়যন্ত্র” করছিলেন।

সোলেইমানির জানাজায় কী হয়?
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয় যে, তেহরানের রাস্তায় বিশাল জনসমাগম হয়েছে জানাজা ঘিরে। সোলেইমানিকে দেশটিতে জাতীয় নায়ক এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতো।

জানাজায় অনেক মানুষকেই কাঁদতে দেখা গেছে। কেউ কেউ সোলেইমানির ছবি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। মানুষ সোলেইমানির কফিন মাথার উপর দিয়ে বয়ে নিয়ে চলে এবং “আমেরিকার মৃত্যু” বলে স্লোগান দিতে থাকে।

সোলেইমানির মেয়ে জয়নাব সোলেইমানি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্র “কালো দিন” দেখবে। “পাগল ট্রাম্প, তুমি ভেবো না যে আমার বাবার শাহাদাতের মধ্য দিয়ে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে,” তিনি বলেন।

সোমবারের জানাজার পর, জেনারেলের মরদেহ শিয়া ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কোমে নিয়ে যাওয়া হবে। পরে মঙ্গলবার কেরমানে তার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে।

তেহরানে সোলেইমানির পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট রূহানি বলেন: “আমেরিকানরা আসলেই বুঝতে পারেনি যে তারা কত বড় ভুল করেছে।”

“এই এলাকার উপর থেকে যেদিন আমেরিকার নোংরা হাত কেটে ফেলা হবে, সেদিনই তার রক্তের বদলা পূরণ হবে।”

ইরানের প্রতিক্রিয়া:
রবিবার ইরান ঘোষণা দিয়েছে যে, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কোন শর্ত তারা আর মেনে চলবে না।

ওই চুক্তিতে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিনিময়ে ইরান পরমাণু সক্ষমতা কমাতে রাজি হয়েছিল।

কিন্তু এক বিবৃতিতে, ইরান বলেছে যে, পরমাণু সমৃদ্ধকরণের সামর্থ্যে, মাত্রায়, মজুদ করায়, গবেষণা বা উন্নয়নের ক্ষেত্রে আর কোন সীমাবদ্ধতা মানবে না।

এই চুক্তির তিন ইউরোপীয় দেশ জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ইরানকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

রবিবার, ইরাকি এমপিরা, বিদেশি সেনাদের দেশত্যাগের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করেছে।

এর আগে, ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে পরাজিত করতে সহায়তা করার জন্য মার্কিন বাহিনীকে ইরাকে স্বাগত জানানো হয়।

ইরানের কুদস বাহিনীর নতুন প্রধান- যার নেতৃত্বে সোলেইমানি ছিলেন- তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিতাড়িত করার অঙ্গীকার করেছেন।

ট্রাম্প কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?
ইরানের হুমকির পর, মিস্টার ট্রাম্প বলেন যে, সোলেইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে কোন পদক্ষেপ নেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা হামলা চালাবে, আর সেটা হবে “অনেকটা অতর্কিতভাবে”।

তিনি বলেন, তেহরান যদি আমেরিকান নাগরিক বা মার্কিন সম্পদে হামলা চালায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ৫২টি সাইটে হামলা চালাতে প্রস্তুত এবং তা “খুব দ্রুত ও কঠোর” হবে। সূত্র: বিবিসি
সানবিডি/ঢাকা/এসএস