৮ শতাংশ প্রাণহানি বেড়েছে সড়কে 

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-১১ ১৪:২২:৩৭


২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনা আগের বছরের সমপরিমাণ হলেও প্রাণহানি ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে সড়কে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত ও ১৩ হাজার ৩৩০ জন আহত হয়েছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়, রেলপথে ৪৮২টি দুর্ঘটনায় ৪৬৯ জন নিহত, ৭০৬ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ২০৩টি দুর্ঘটনায় ২১৯ জন নিহত ও ২৮২ জন আহত এবং ৩৭৫ জন নিখোঁজ হয়। সড়ক, রেল, নৌ-পথে সর্বমোট ৬২০১ টি দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৫৪৩ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ৩১৮ জন আহত হয়েছে।

তিনি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে  উল্লেখ করেন— বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদকসেবন করে যানবাহন চালানো, রেলত্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা কিংবা ফুটপাত বেদখল, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহনের সংখ্যা বেডে যাওয়া।

এ সময় তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশগুলো হলো— ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা, টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে হাট-বাজার অপসারণ, ফুটপাত দখল মুক্ত করা, দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন ও জেব্রাক্রসিং অঙ্কন, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা, যাত্রী, পথচারী ও গণপরিবহনবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধিমালা প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের মতো আধুনিকায়ন, সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিল গঠন, হতাহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, দেশব্যাপী চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ গ্রহণ, ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমি গড়ে তোলা, গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব, জেলা প্রশাসকসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতিমাসে একদিন গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা এবং সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।