৯ শতাংশ কমবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-২১ ০৯:০৭:৫৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি বছর প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ কমতে পারে। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। চাহিদার তুলনায় উত্তোলনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি দেশটিতে পণ্যটির দাম কমাতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া এ খাতে দেশটির দক্ষতা বাড়ায় পণ্যটির উত্তোলন ব্যয় হ্রাস, তেলকূপ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে চাঙ্গা ভাব ও প্রধান গ্যাস খনি অঞ্চলগুলোয় পাইপলাইন ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি জ্বালানিটির দাম কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইসডটকম।
ইআইএর শর্ট-টার্ম এনার্জি আউটলুকে (এসটিইও) বলা হয়, উত্তোলন বৃদ্ধির সঙ্গে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমায় এ বছর দেশটিতে পণ্যটির অভ্যন্তরীণ ব্যবহার ও রফতানিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিরাজ করতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর ইউএস বেঞ্চমার্ক হেনরি হাবে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (প্রতি ঘনফুটে ১ হাজার ৩৬ ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) প্রাকৃতিক গ্যাসের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ২ ডলার ৩৩ সেন্টে, যা বিদায়ী বছরের তুলনায় প্রায় ২৪ সেন্ট কম। ২০১৯ সালে হেনরি হাবে প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম ছিল ২ ডলার ৫৭ সেন্ট।
২০১৯ সালে দেশটির কূপগুলো থেকে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ২০০ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের পূর্বাভাস করেছে ইআইএ। প্রতিষ্ঠানটি প্রত্যাশা করছে, এ বছর পণ্যটির উত্তোলন আরো বেড়ে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ৪৭০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। তবে অব্যাহত দরপতন রোধে আগামী বছর পণ্যটির উত্তোলনে রাশ টানতে পারে দেশটি।
এদিকে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারে সামান্য প্রবৃদ্ধি মিলতে পারে। ইআইএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের তুলনায় এ বছর দেশটিতে পণ্যটির ব্যবহার ১ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে। তবে আগামী বছরে এ খাতে দেশটির প্রবৃদ্ধি কমবে বলে পূর্বাভাস করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালে দেশটিতে জ্বালানিটির ব্যবহার কমে ৮ হাজার ৫৭০ কোটি ঘনফুটে নামতে পারে।
চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের আবাসিক ও বাণিজ্য খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার কমতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে শীতে ঘর উষ্ণ রাখা বা গ্রীষ্মে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের জন্য জ্বালানি চাহিদা কমতে পারে। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে পণ্যটির চাহিদা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়তে পারে। পরিবেশ ইস্যুকে কেন্দ্র করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবর্তে প্রাকৃতিক গ্যাসে ঝুঁকছে দেশটি, যা এ খাতে জ্বালানিটির ব্যবহার বাড়িয়ে তুলছে। তবে ২০২১ সাল নাগাদ মূল্যবৃদ্ধির জেরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পণ্যটির ব্যবহার ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস করেছে ইআইএ। এ খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবর্তে দখল বাড়বে নবায়নযোগ্য জ্বালানি যেমন বায়ু ও সৌরশক্তির। অন্যদিকে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বাড়বে, যা আগামী বছরেও অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া পণ্যটির রফতানি বাণিজ্যে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ২০১৮ সালে দেশটি প্রথমবারের মতো প্রাকৃতিক গ্যাসের নিট রফতানিকারকে পরিণত হয়। চলতি বছর দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি আগের বছরের তুলনায় দৈনিক গড়ে ২০০ কোটি ঘনফুট বেড়ে ৭৩০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। আগামী বছর তা আরো বেড়ে ৮৯০ কোটি ঘনফুট ছুঁতে পারে।
সানবিডি/এনজে