চীনে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০১-২৬ ০৯:২৮:২৬


চীনে প্রতিদিন নতুন প্রকৃতির করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা আজ রবিবার (২৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ জনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজারের কাছাকাছি।

তবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত বিশ্বের ১২টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।

এই ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে দেশটির সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব নতুন চান্দ্রবছর উদ্‌যাপনে অন্ধকার নেমে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে এ মহাবিপর্যয় মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে আরো কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার। ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল হুবেই প্রদেশে প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল নতুন করে প্রদেশটির ১৮টি শহরে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে প্রদেশটির পাঁচ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। প্রদেশটির রাজধানী উহানে মোতায়েন করা হয়েছে চীনা সেনাবাহিনীর ৪৫০টি মেডিক্যাল টিম। সাধারণ মানুষ মাস্ক ও প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে ভিড় করছে ফার্মেসিগুলোতে। অনেক ফার্মেসি ওষুধসংকটেও ভুগছে।

২০১৯ সালের আগে এই ভাইরাসটি বিশ্বে কখনো দেখা যায়নি। এ কারণে একে নতুন প্রকৃতির করোনাভাইরাস বা ২০১৯-এনকোভ নামেও পরিচিত। এ ভাইরাসটিকে সার্স ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।

গতকাল যখন চীনে নতুন চান্দ্রবছর উদ্‌যাপন করার কথা, তখন মানুষ লাইন দিচ্ছে ওষুধের দোকানগুলোতে। অথচ এই চান্দ্র নববর্ষ চীনের সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান। লোকজনকে, বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষকে মাস্ক, পূর্ণাঙ্গ শরীর ঢাকার স্যুট ও সার্জিক্যাল গ্লাভস কিনতে দেখা গেছে।

হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে গতকাল কোনো যানবাহন বের হতে দেয়নি পুলিশ। এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘কেউ বের হতে পারবে না।’ তবে যেসব চিকিৎসা কর্মকর্তা ছুটির কারণে প্রদেশটির বাইরে গিয়েছিলেন, তাঁদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। এমন এক নারী চিকিৎসক স্যুটকেস হাতে প্রবেশের সময় এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের তাদের দরকার। না হলে তারা একদমই শেষ হয়ে যাবে।’

চীনের অন্যত্রও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাজধানী বেইজিং ও সাংহাইয়ে নির্দেশনা রয়েছে, যেসব বাসিন্দা ভাইরাস আক্রান্ত স্থান থেকে ভ্রমণ করে এসেছে, তারা ১৪ দিন বাড়ির বাইরে বের হতে পারবে না। এ ছাড়া প্রধান প্রধান পর্যটন এলাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে; যেমন-বেইজিংয়ের ফরবিডেন সিটি ও মহাপ্রাচীরের একাংশ। দেশের অন্যান্য এলাকায় বড় ধরনের প্রধান প্রধান অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। সাংহাইয়ের ডিজনি রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হচ্ছে। পাঁচটি শহরে বন্ধ করা হচ্ছে ম্যাকডোনাল্ডসের রেস্টুরেন্ট।

চীনের বাইরে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানে গতকাল পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত মানুষ পাওয়া গেছে।

সানবিডি/এনজে