সম্পর্ক নষ্ট করছে পাকিস্তান

আপডেট: ২০১৫-১১-২৬ ২০:০৮:৫২


Bangladesh-pakবাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কে আবারো অবনতি হতে শুরু করেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের বিচার কার্যকর করা নিয়ে পাকিস্তানের নগ্ন অবস্থান এর কারণ বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তবে ঢাকা ইসলামাবাদের অবস্থানে এতটাই ক্ষুব্ধ যে, তাদের অবস্থানকে পাত্তাই দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. দেলোয়ার হোসন জাগো নিউজকে বলেন, পাকিস্তান জাতিগতভাবে কোনদিনই বাংলাদেশের বন্ধু ছিলো না। তারা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা কখনোই করে নি। তাই একটি যৌক্তিক বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তুলছে। এছাড়া এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

তিনি আরো বলেন, সম্পর্কের অবনতি হলেও বাংলাদেশ সঠিক পথেই হাঁটছে। কিন্তু পাকিস্তান কূটনীতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করছে।

জানা যায়, সর্বশেষ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় দুই যুদ্ধাপরাধী বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের। এর আগে আইসিটি আইনের প্রতিটি ধাপ যথাযথভাবে রক্ষা করে সরকার।

রায় কার্যকরের পর পাকিস্তান এ বিচার প্রক্রিয়াকে প্রসহন হিসেবে উল্লেখ করে বিবৃতি দেয়। সেখানে সাকা ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে পাকিস্তান সরকার। যদিও দেশটি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত। হানাহানি আর বোমা হামলা ছাড়া একটি দিনও পার করতে পারছে না পাকিস্তান।

তবে দেশটির মানবাধিকার কর্মীরা পাকিস্তান সরকারের এমন অবস্থানের বিপক্ষে। তারা বলছে, পাকিস্তান সরকার যেন নিজ দেশের নাগরিকদের থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।

অপরদিকে, পাকিস্তানের বিচারবিরোধী এ অবস্থানের কারণে কঠোর অবস্থানে ঢাকা। গত সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে পাকিস্তানকে কড়া প্রতিবাদ জানানোর নির্দেশ দেন। ওই দিন দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তলব করা হয় ঢাকায়  নিযুক্ত পাক হাই কমিশনারকে। তাকে ডেকে লিখিত প্রতিবাদ জানানো হয়। এর দুই পার হতে না হতেই পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে তলব করেছে পাক সরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে দৃশ্যমান পাকিস্তান এখনও রাজাকার দোসরদের রক্ষায় নগ্নভাবে অবস্থান নিয়েছে।

জানতে চাইলে আরেক আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিশ্লেষক ড. আমেনা মহসীন বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের মানুষের আবেগ না বুঝে এবং কূটনীতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে ভুল করছে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তান মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে নানাভাবে বিরোধিতা করে আসছে। ২০১৩ সালে কাদের মোল্লার বিচারের রায় কার্যকরের পর দেশটির পার্লামেন্ট শোক প্রস্তাবও গ্রহণ করে।  এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় পাক হাই কমিশন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে  গণজাগরণ মঞ্চ। সেখানে ১৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে পাকদের সঙ্গে সর্ম্পক ছিন্ন করার দাবি জানান মঞ্চের কর্মীরা।

কূটনীতিক সূত্র জানায়, পর্যায়ক্রমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ কমছে। তাই সরকার বিচার প্রক্রিয়া আরো গতিশীল করতে প্রস্তত। এমন প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের তোলা প্রশ্নের কঠোর জবাব দেয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি লিখিত চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কমিশনকে।