ভারতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত ২ জন

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-০২ ১৬:৩০:০৪


ভারতে এবার করোনা আতঙ্ক। নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ জন। একজন দিল্লির বাসিন্দা ও অন্যজন তেলেঙ্গানার। সোমবার সরকারের তরফে এ তথ্য জানানো হয়েছে। একজন ইতালি থেকে ফিরেছেন ও অন্যজন দুবাই থেকে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, এই নিয়ে ভারতে মোট ৫ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ৩ জনকে আগেই চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, আপাতত ২ জনেই স্থিতিশীল। তাদের উপর বিশেষ নজর রাখছেন চিকিৎসকেরা।

এদিকে চীনে রোববার করোনাভাইরাসে আরও ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে এত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯১২ জনে গিয়ে দাঁড়ালো। তবে ইরান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বজুড়ে করেনায় মারা গেছে ৩ হাজারের বেশি মানুষ।

রোববার চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। সেখানে আরও ১১ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশটিতে করোনায় প্রাণ হারালো মোট ৫৪ জন। চীনের বাইরে এই ভাইরাসে এটিই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা।

ইতালিতে মারা গেছে পাঁচজন। ফলে সেখানে করোনায় মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ালো ৩৪ জনে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সবমিলিয়ে ১৬৯৪ জন। ইউরোপের কোনও দেশে এটিই করোনায় আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৩০য়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। দেশটিতে মারা গেছেন মোট দুইজন। এছাড়া ইউরোপের চেক প্রজাতন্ত্র, স্কটল্যান্ড ও ডোমিনিকা প্রজাতন্ত্রেও প্রথমবারের মতো করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।

রোববার দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত আরও চারজন মারা গেছেন। ফলে দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২২য়ে। এছাড়া সেখানে নতুন করে আরও ৪৭৬ জন কভিড-১৯য়ে আক্রান্ত হয়েছে বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সিউল কর্তৃপক্ষ। এর ফলে দেশটিতে এই ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৪২১২তে। চীনের পর বর্তমানে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। সবমিলিয়ে করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের মোট সংখ্যা ৩০৫৩ জন।

জাপানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫০ এবং মৃত্যু ১২। সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত ১০২ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

হংকংয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৯৫ এবং মৃত্যু ২। যুক্তরাষ্ট্রে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ এবং মৃতের সংখ্যা ২। জার্মানিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৫৭, স্পেনে ৪৬, কুয়েতে ৪৫, থাইল্যান্ডে ৪২, তাইওয়ানে আক্রান্ত ৩৯ এবং মৃত্যু ১। বাহরাইনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮, মালয়েশিয়ায় ২৫, অস্ট্রেলিয়ায় ২৪, যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ এবং মৃত্যু ১।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাতে এখন পর্যন্ত ১৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মিশরে আক্রান্তের সংখ্যা ২। ভিয়েতনামে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬, কানাডায় ১৪, ইরাকে ১৩, সুইডেনে ১৩, ম্যাকাউতে ১০, সুইজারল্যান্ডে ১০, লেবাননে ৭, ক্রোয়েশিয়ায় ৬, নেদারল্যান্ডসে ৬, নরওয়েতে ৬, ওমানে ৬, অস্ট্রিয়ায় ৫, ইসরায়েলে ৫, রাশিয়ায় ৫, গ্রিসে ৪, মেক্সিকোতে ৪, পাকিস্তানে ৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

অপরদিকে ফিলিপাইনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের। ফিনল্যান্ডে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩, ভারতে ৩, রোমানিয়ায় ৩, ডেনমার্কে ২, জর্জিয়ায় ২, ইকুয়েডরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ১ এবং মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।

আফগানিস্তানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১, আলজেরিয়ায় ১, আজারবাইজানে ১, বেলারুসে ১, বেলজিয়ামে ১, ব্রাজিলে ১, কম্বোডিয়ায় ১, মিসরে ১, এস্তোনিয়ায় ১, আইসল্যান্ডে ১, আয়ারল্যান্ডে ১, লিথুনিয়ায় ১, মোনাকোতে ১, নেপালে ১, নিউজিল্যান্ডে ১, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ১, নাইজেরিয়ায় ১, কাতারে ১, শ্রীলঙ্কায় ১ ও ইন্দোনেশিয়ার একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম দশা চীনা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। শুধু চীন নয়, বিশ্ব জুড়ে বড় বড় গবেষকরা নেমে পড়েছেন নোভেল করোনা রুখে দেওয়ার ওষুধ তৈরিতে। কিন্তু এখনও এই ভাইরাসের কোনও প্রতিষেধক বা ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও।

ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসকে বিশ্ববাসীর জন্য ‘মারাত্মক হুমকি’হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থার মহাপরিচালক ইথিওপিয়ার টেডরস আধানম গেব্রিয়াসেস বলেছেন, এ ভাইরাসটি ‘যেকোনো সন্ত্রাসবাদী পদক্ষেপের চেয়েও শক্তিশালী’হতে পারে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস