নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংস্কার হচ্ছে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-০৪ ১৮:০৩:২৬


লুটপাট আর নানা অব্যবস্থাপনায় সংকটে পড়া নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বাঁচানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

পাশাপাশি এ খাতের তারল্য সংকট কাটাতে বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের আশ্বাস দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণকারী এ সংস্থা।

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকে গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন- বাংলাদেশ লিজিং এ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

বৈঠকে ১১টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম ও মহাব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মমিনুল ইসলাম বলেন, ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান খারাপ অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে পুরো খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই সংকটে থাকা এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনঃসংস্কার করা হবে। এটি কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নীতিনির্ধারণ বিষয়ক একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও কাজ করছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্বাহীদের এই নেতা বলেন, পিপলস লিজিংয়ের ঘটনায় আমানতকারীদের মধ্যে এক ধরনের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে।

এটি কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চেয়েছি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে কোন কাঠামোতে এ ধরনের তহবিল করা যায়- তা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মমিনুল ইসলাম বলেন, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিভাবে রিকনস্ট্রাকশন বা পুনঃসংস্কার করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত করা যায় কিনা সে বিষয়েও ভাবছি।

আর্থিক খাতের অবস্থা ভয়াবহ রকমের খারাপ নয় দাবি করে মমিনুল ইসলাম বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যেই বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করবে দেশবাসী। শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বলদের একীভূত করার বিষয়ে রাজি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সবলদের ব্যবসাতেও প্রভাব পড়ছে। তাই দুর্বলদের একীভূত করে সামনে আগাতে একমত শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ প্রতিবেশির ঘরে আগুন লাগলে নিজের ঘরকে বিপদমুক্ত ভাবার কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম জানান, সোমবার বিএলএফসিএ অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একটি তহবিলের বিষয়ে আবেদন জানিয়েছে। একই বিষয়ে গভর্নরকে জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি আর্থিক খাতে আস্থা ফেরাতে নতুন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কিনা সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিএলএফসিএ-এর ভাইস চেয়ারম্যান এবং আইআইডিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারওয়ার ভূঁইয়া বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০১৯ সালে আর্থিক খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো। কিন্তু একটি মাত্র ঘটনা সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। বাজারে তৈরি করেছে আস্থার সংকট। খুব শিগগিরই এ সংকট কাটিয়ে উঠব।

গোলাম সারওয়ার আরও বলেন, এই খাতটিকে অনেক সময় লিজিং খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু আমাদের ব্যবসার মাত্র ১০ শতাংশ লিজিং খাতে বিনিয়োগ হয়। তাই লিজিং খাতের পরিবর্তে এটাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি দিতে হবে। নতুন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনেও কথাটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস