তিস্তায় পানি নাই তাই মাছও নাই

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-০৭ ১৭:৪৬:৫৪


আগের মত পানি নেই,তাই মাছও হারিয়েছে।এক সময়ের উন্মত্ত খরস্রোতা তিস্তা এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।এজন্য তিস্তা নির্ভর রংপুরের পীরগাছার নদীগুলো চরে পরিণত হয়েছে। তিস্তাতে পানি প্রবাহ না থাকায় নদীগুলোও শুকিয়ে গেছে। ফলে পানি শূন্যতায় মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। এতে উপজেলাজুড়ে প্রায় চার হাজার জেলে পরিবারে দুর্দিন চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিস্তায় পানি প্রবাহ না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে অন্যান্য নদ-নদীতে। নাব্যতা সঙ্কট ও দখলের কারণে আলাই কুমারী ও মাষাণ কুড়া মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। অস্তিত্ব হুমকিতে রয়েছে বুড়াইল ও ঘাঘট নদ। দখল হয়ে যাওয়ায় ৫০ ফুট প্রশস্ত ঘাঘট নদ এখন ১০ ফুটে এসেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রমত্তা তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ নেই বললে চলে। মাঝ নদীতে জেগে ওঠেছে ছোট বড় চর-ডুবোচর। চারদিকে সবুজের সমারোহ। সামান্য পানিতে জেলেরা দল বেঁধে মাছ ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের জালে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। তিস্তার মূল নদী থেকে একাধিক শাখা-প্রশাখা তৈরি হয়েছে। তাতে সামান্য পানিতে চলছে জেলেদের মাছ ধরার ব্যর্থ চেষ্টা। সারা দিন জেলেরা নদীতে জাল ফেলে মাছ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরছে।

জেলেরা জানান, বর্ষা মৌসুমে জেলেরা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও শুকনোর মৌসুমে চরম বিপাকে পড়ে। বছরের ছয় মাস মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চলে। বাকি ছয় মাস ধার দেনা করে চলতে হয়। এতে পরিবারের ভরণ পোষণের ব্যয়ভার নিতে অনেক জেলেকেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এনজিও থেকেও ঋণ নিয়ে অনেকে কিস্তি দিতে পারছে না। দেনার দায়ে অনেকে এখন এলাকা ছাড়া। অনেকে এ পেশা ছেড়ে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র বলেন, তিস্তাসহ তাম্বুলপুর ছাড়ায় পর্যাপ্ত পানি নেই। অন্য কোনো কাজ পারি না। বেকার বসে আছি।

পীরগাছা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্ব) বলেন, ‘নদী, খাল-বিলে এখন তেমন পানি নেই। মাছও ধরা পড়ছে না। জেলেরা এখন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন’

পীরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবার রহমান বলেন, ‘এই অঞ্চলের জেলেদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারলেও শুষ্ক মৌসুমে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প ভাবে আয় বাড়লে তাঁদের জীবন-যাত্রার মানও বাড়বে।

সানবিডি/এনজে