দরপতনের ধাক্কায় ভারতীয় সুতার বাজার
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-০৮ ১৫:২৫:৪২
ভারতে উৎপাদিত সুতার সবচেয়ে বড় বাজার চীন। প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে চীনের সুতার খুচরা দোকান ও কলকারখানাগুলোর কার্যক্রম বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। ফলে পণ্যটির আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে দেশটি। এতে ভারতের সুতা ও তুলা খাতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। রফতানি বন্ধ হওয়ায় দেশটির অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বেড়ে গেছে। ফলে দাম কমছে। এক মাসের ব্যবধানে দেশটির বাজারে সুতা ও এর প্রধান কাঁচামাল তুলার দাম ১০ শতাংশের বেশি কমেছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ও ইকোনমিকস টাইমস।
ভারতের তুলা ও সুতার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার গনডাল। দেশটির গুজরাট রাজ্যের রাজকোট জেলার একটি শহর। গনডাল বাজারে গত বৃহস্পতিবার অপ্রক্রিয়াজাত তুলার দাম কমে কুইন্টালপ্রতি (১০০ কেজি) ৪ হাজার ২৮০ রুপিতে নেমেছে, এক মাস আগের তুলনায় যা ১০ শতাংশ কম। এক মাস আগে পণ্যটির প্রতি কুইন্টালের দাম ছিল ৪ হাজার ৭৫৫ রুপি। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কুইন্টালে দাম ৪৭৫ রুপি কমেছে।
এদিকে প্রধান কাঁচামাল তুলার দাম কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে সুতার দামেও। একই বাজারে এদিন সুতি সুতার দাম আগের মাসের তুলনায় ২-৩ শতাংশ ও সিনথেটিক সুতার দাম ৪-৫ শতাংশ কমেছে।
ভারত সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (সিসিআই) সভাপতি অতুল জ্ঞানেত্র জানান, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সুতার দামে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা পণ্যটির রফতানিকারক দেশগুলোর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জে সুতি সুতার দাম কমে ৬০ দশমিক ৫০ সেন্টে নেমেছে। আগের দিন পণ্যটির দাম ছিল ৭১ দশমিক ৫ সেন্ট।
চলতি বছরের শুরু থেকেই চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়। এতে দেশটির অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে সংক্রমণ ও ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব রোধে যোগাযোগের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটি, যা তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। দেশটির সুতার খুচরা দোকান ও কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চীন থেকে রফতানি আদেশের অভাবে ভারতের তুলা ও সুতা রফতানি বন্ধ গেছে।
গুজরাটের একজন সুতা রফতানিকারক জানান, চীন থেকে ক্রয়াদেশের অভাবে ভারতের তুলা ও সুতা রফতানি স্থবির হয়ে পড়েছে। এমনকি পণ্যটির ক্রয়াদেশ পেতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা তেমন কোনো আগ্রহ দেখায়নি। কারণ পণ্যটির রফতানির পর যদি পরিমাণ বা মানগত কোনো সমস্যা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের চীন সফরের প্রয়োজন হতে পারে। তবে ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে দেশটিতে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে তুলার এমন দ্রুত দরপতন রোধ করে বাজার চাঙ্গা রাখতে মূল্যছাড়ের অফার হাতে নিয়েছে সিসিআই। প্রতি ক্যান্ডিতে (৩৫৬ কেজি) মানভেদে ৩ হাজার ২০০ রুপি থেকে ৫ হাজার রুপি পর্যন্ত মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে শুধু পুরনো মজুদকৃত তুলার ক্ষেত্রে এ মূল্যছাড় কার্যকর হবে। বাজারে আসা নতুন তুলার ক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে না।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস