বড়াল নদের চরে ইরি তিল কলাই মরিচের আবাদ!

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-১১ ১৭:২২:০০


প্রমত্তা পদ্মার শাখা বড়াল নদ নাব্য হারিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। নদের বুকে পলি জমে দুপাড় চেপে গেছে এবং নদের পাড়ে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে।

এই নদের চর ভূমিগ্রাসীরা দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে এ নদের বুকে ইরি, তিল, কলাই, মরিচ, বেগুনসহ বিভিন্ন আবাদ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট থেকে পদ্মার শাখা হিসেবে বড়াল নদের উৎপত্তি হয়ে রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট, নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঘাবাড়ী হয়ে হুড়া সাগরের বুকে মিশে নাকালিয়ায় যমুনায় পড়েছে। এক সময় যোগাযোগের সুবিধার কারণে বড়াল নদের দুই পাড়ে আড়ানী বাজার, রুস্তমপুর পশুহাট, পাঁকা বাজার, জামনগর বাজার, বাঁশবাড়িয়া বাজার, তমালতলা বাজার, বাগাতিপাড়া থানা, দয়ারামপুর সেনানিবাসসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৯৮১-৮২ অর্থ বছরে নদের তীরবর্তী উপজেলাগুলোকে বন্যামুক্ত করার জন্য উৎসমুখ চারঘাটে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ এবং যাতায়াতের জন্য নদের বুকে একাধিক ব্রিজ নির্মাণ করায় এ নদের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রন্থ হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে আড়ানী এরশাদ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাহাবাজ আলী বলেন, বাড়ল নদের বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট ও বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানির স্বাভাবিক গতি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট ও বাঁধ নির্মাণের ফলে ক্রমান্বয়ে বড়াল শুকিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। এখন বড়ালে তলদেশে বিভিন্ন আবাদ করা হচ্ছে। বর্ষায় কিছু পানি জমলেও শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই মরা এ নদ খালে পরিণত হয়।

আড়ানী গোচর গ্রামের কৃষক কলিম উদ্দিন বলেন, বড়ালে পানি না থাকায় এলাকার কৃষকরা নদের বুক জুড়ে ফসলের আবাদ করেন। পরিণত হয় গবাদি পশুর চারণ ক্ষেত্রে। এক সময় যে বড়ালের পানির সেচে নদীর তীরবর্তী মানুষ তাদের জমিতে ফসল ফলাত। এখন সে নদের বুকে অগভীর নলকূপ বসিয়ে চলে ধান চাষ।

আড়ানী সরকারি মনোমোহীনি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান জুয়েল বলেন, বড়াল নদে পানি না থাকায় এ নদের ধারে গড়ে উঠা ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রগুলো তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। সেচসহ প্রতিদিনের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করায় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এখনই সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করে পুনঃখনন করা না হলে বড়াল তার ঐতিহ্য হারিয়ে শেষ হয়ে যাবে।

বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে বড়ালে পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে বড়ালের ধারে ক্ষেতে পানি দিতে অসুবিধা হয় কৃষকদের। দ্রুত খনন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সানবিডি/এনজে