৪ দেশ ভ্রমণে বিদেশীদের কোয়ারান্টাইন বাধ্যতামূলক
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৩-১২ ১২:৩২:৪৭
নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) সংক্রমণে আক্রান্ত দেশ চীন, ইতালি, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণ করেছেন—এমন বিদেশী নাগরিকদের কোয়ারান্টাইন বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ সরকার। এ দেশগুলোয় সম্প্রতি ভ্রমণ করেছেন বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশী নাগরিকদের ১৪ দিন স্বেচ্ছায় কোয়ারান্টাইন বা নিজ থেকে আলাদা বসবাস করতে হবে। গতকাল ঢাকায় অবস্থিত সব বিদেশী মিশনে নোট ভারবাল পাঠিয়ে সরকারের ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নোটে বলা হয়েছে—বৈশ্বিক সংকট নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। জনবহুল বাংলাদেশও এর ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয়। এখানে এ পর্যন্ত তিনজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। বেশ কয়েকজন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এ অবস্থায় বাংলাদেশে থাকা বিদেশী নাগরিক কিংবা জরুরি প্রয়োজন বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসা বিদেশী যারা উল্লিখিত চার দেশ সফর করেছেন কিংবা ভ্রমণকালে চীন, ইতালি, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো না কোনো বিমানবন্দর ব্যবহার করেছেন, ট্রানজিটে সময় কাটিয়েছেন তাদের ঢাকা পৌঁছার দিন থেকে ১৪ দিন সেলফ কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা নিজেরাই নিজেদের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখবেন, অর্থাৎ সতর্কতার সঙ্গে নিজেদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন। ওই ১৪ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৪তম দিনেও যদি কারো শরীরে জ্বর আসে এবং তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর ওঠে এবং সঙ্গে হাঁচি-কাশি অথবা গলা ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট কিংবা ডায়রিয়া হয়, তাহলে অবশ্যই তাকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) যোগাযোগ করতে হবে।
বিদেশীদের জরুরি যোগাযোগের জন্য আইইডিসিআর হটলাইন ছাড়াও চারটি নম্বর +৮৮০১৯২৭৭১১৭৮৪, +৮৮০১৯২৭৭১১৭৮৫, +৮৮০১৯৩৭১১০০১১ ও +৮৮০১৯৩৭০০০০১১ ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিদেশী মিশনগুলোয় পাঠানো ওই নোটের বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশ মিশনকেও অবহিত করা হয়েছে। যাতে ওই দেশগুলোয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে বাংলাদেশী কূটনীতিকরা ব্রিফ করতে পারেন।
জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ ৫০ কোটি টাকা
প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার প্রস্তুতি হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গতকাল এ অর্থ বরাদ্দের কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
অর্থ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ আবু ইউছুফ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ‘কভিড-১৯’ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে সচিবালয় অংশে ‘সাধারণ থোক বরাদ্দ’ খাতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো।
এ অর্থের মধ্যে ৪৫ কোটি ৫১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ, ১ কোটি ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা জনসচেতনায় প্রকাশনা কাজে এবং ২ কোটি ৫০ হাজার টাকা কেমিক্যাল-রি-এজেন্ট খাতে ব্যয় করা হবে। তবে অর্থব্যয়ে কিছু শর্তও জুড়ে দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অর্থব্যয়ের ১০ দিনের মধ্যে কোন কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে, তার বিস্তারিত অর্থ বিভাগকে জানাতে হবে।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস