বিনিয়োগকারীদের চাহিদা পূরণ করতে পারবে ওয়ালটন
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৩-১৪ ১৯:০২:১৬
পুঁজিবাজারে দিন দিন শেয়ার সরবরাহ বাড়ছে। কিন্তু ভালো শেয়ারের অভাবে বাজার গতি পাচ্ছে না। এবার সেই অভাব দূর করতে পুঁজিবাজারে আসছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এই খবরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। ওয়ালটন শেয়ারবাজারে আসার খবরে তারা খুব খুশি।
ওয়ালটনের শেয়ার সরবরাহের মধ্য দিয়ে বাজারে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তারা মনে করছেন। এই ভাবনার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কোম্পানিটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং মৌলভিত্তি সম্পন্ন হওয়ায় বিনিযোগকারীদের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ওয়ালটনের আইপিওতে আসা নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। ওয়ালটনের ব্যবসার যে বিশাল পরিধি এবং তাদের যে ভবিষ্যত রোড ম্যাপ তাতে তাদের শেয়ারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। উপরন্তু বিনিয়োগকারীরা ভালো লভ্যাংশ পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে বলেন, দেশের ঘরে ঘরে ওয়ালটনের পণ্য রয়েছে। এই কোম্পানি দেশের সম্পদ। আর এমন একটি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্তির পর বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।
তিনি আরো বলেন, অতীতে আইপিওর মাধ্যমে বাজারে অনেক কোম্পানি এসেছে। তাদের অধিকাংশই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। অনেকে শেয়ারবাজারে আসার পর ভালো দর পায়নি। কিন্তু ওয়ালটনের যে কাট অফ প্রাইস নির্ধারিত হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা এখান থেকে নিশ্চিত মুনাফা অর্জনে সক্ষম হবেন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকার হাউজ আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুদ্দিন বলেন, বাজারে ভালো কোম্পানির চাহিদা সব সময় রয়েছে। সে দিক দিয়ে ওয়ালটন একটি ভালো কোম্পানি। আর এ কারণে কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি।
তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের কাছে ভালো কোম্পানির চাহিদা রয়েছে বলে এসব কোম্পানির শেয়ার বাজারে বেশি ছাড়া উচিত। কিন্তু বাজারে ওয়ালটন যে পরিমাণ শেয়ার ছেড়েছে তা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের তুলনায় অনেক কম। তবে যত বেশি ভালো শেয়ার আসবে শেয়ারবাজার তত গতিশীল হবে।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেডের বিনিয়োগকারী তৌহিদুল পলাশ। তিনি বলেন, বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে ওয়ালটনের পণ্য রয়েছে। আমার ঘরেও ওয়ালটনের এসি এবং ফ্রিজ আছে। বিভিন্ন দেশে তারা পণ্য রপ্তানিও করছে। এমন একটি কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হচ্ছে যা দেশের শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রত্যেকেই তার নাম জানে। এই কোম্পানি শেয়ারবাজারে এলে আমরা উপকৃত হব। শুধু বিনিয়োগকারীরা নয়, ওয়ালটনের শেয়ার লেনদেন শুরু হলে বাজার অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াবে। আমরা ওয়ালটনের তালিকাভুক্তি ও লেনদেন শুরুর অপেক্ষায় আছি।
আইসিবি ইনভেস্টরস ফোরামের নেতা বিনিয়োগকারী মহসিন আহমেদ বলেন, ওয়ালটন আমাদের দেশের গর্ব। কোম্পানিটি শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবে এটা ভাগ্যের বিষয়। কোম্পানির শেয়ার ধারণ করে ওয়ালটনের মালিকানার অংশীদার হওয়া যাবে এটা ভেবে আমরা উচ্ছ্বসিত।
ওয়ালটনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ওয়ালটন বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল একটি মাল্টিন্যাশনাল ব্র্যান্ড। দেশের জনগণকে এর অংশীদার বানানোর প্রয়াসে পুঁজিবাজারে আসছে ওয়ালটন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ওয়ালটনের শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিত লাভবান হবেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গত অর্থবছরের চেয়ে নিশ্চিতভাবেই অনেক বেশি প্রফিট করবে ওয়ালটন।
ওয়ালটন বাংলাদেশেই উচ্চমানের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এতে কমেছে আমদানি ব্যয়। ফলে সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। হচ্ছে ব্যাপক কর্মসংস্থান। পাশাপাশি বেড়েছে রপ্তানি আয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সাধারণ জনগণকে ওয়ালটনের এই অগ্রযাত্রার অংশীদার করার উদ্দেশ্য নিয়েই পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি রোড শো করে ওয়ালটন। এরপর গত জানুয়ারি মাসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সভায় কোম্পানির আইপিও বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ওয়ালটনের শেয়ারের কাট অফ
প্রাইস নির্ধারিত হয়েছে ৩১৫ টাকা।